"পৃথিবীর আকৃতি" নিয়ে ব্রাদার রুহুল ও যবনদের অপপ্রচার খণ্ডন।।




আজকের আলোচনায় যথাক্রমে ঋগবেদ, শতপথ ব্রাহ্মণবায়ু পুরাণে পৃথিবীর আকৃতি নিয়ে অপপ্রচারের সমাধান করা হবে। 

🔹 প্রশ্নঃ ঋগ্বেদ সংহিতা ও শতপথ ব্রাহ্মণে কি পৃথিবীর আকৃতি চারকোনা ইট বলা হয়েছে?

🔸 উত্তরঃ সম্প্রতি বিভিন্ন হিন্দুবিদ্বেষী ব্লগে এই বিষয়ে প্রচার করা হচ্ছে যে হিন্দু শাস্ত্রে নাকি দাবী করা হয়েছে পৃথিবী গোলাকার নয় বরং ইটের মতো চতুষ্কোণ। "ফ্রম মুসলিম" নামক একটি ব্লগে "ইন্দো আর্য" নামে এক সমাজী যে সম্ভবত ধর্ম পরিবর্তন করেছে সে দাবী করেছে ঋগ্বেদ সংহিতা ও শতপথ ব্রাহ্মণে নাকি পৃথিবীর আকৃতি ইটের মতো চতুষ্কোণ বলা হয়েছে। এগুলো নিয়ে আবার অপপ্রচার করছে মোবাইল মেকানিক ব্রাদার রুহুল। আমরা আজ ওদের দাবীকৃত মিথ্যাচারের শাস্ত্রীয় খণ্ডন দিবো। 


খণ্ডনঃ 

প্রথম পয়েন্টঃ অপপ্রচারকারীরা প্রথমে ঋগ্বেদ সংহিতার একটি মন্ত্র (১০/৫৮/৩) থেকে দাবী করে যে সনাতন শাস্ত্রে পৃথিবীর আকৃতি চতুষ্কোণ বলা হয়েছে অর্থাৎ ইটের মতো। এই অপপ্রচারের নিমিত্তে তারা পশ্চিমা গবেষক গ্রিফিতের অনুবাদ তুলে আনে যার সাথে সনাতন বৈদিক পরম্পরার কোন সংযোগই নেই। এই মন্ত্রে গ্রিফিতের অনুবাদও অস্পষ্ট। কেন অস্পষ্ট সেটাও ব্যাখ্যা করবো। 

অনুবাদঃ গ্রিফিত

প্রথমে আমাদের দেখতে হবে যে এই সুক্তের (৫৮) দেবতা কে! ঋগ্বেদ সংহিতার দশম মণ্ডলের ৫৮তম সুক্তের দেবতা হলো মৃত বন্ধু বা ভ্রাতার মন-প্রাণ প্রভৃতি। এই সুক্তের মোট মন্ত্র হলো ১২ টি। প্রতিটি মন্ত্রই মনকে দেহের মধ্যে ফিরিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে যে মন বিভিন্ন দিকে চলে গেছে। 

আমরা বৈদিক পরম্পরার ভাষ্যকারদের ভাষ্যের প্রতিটি মন্ত্রের অর্থ বিশ্লেষণ করে দেখার চেষ্টা করবো। 

ঋগ্বেদ সংহিতার ১০/৫৮ এর মন্ত্রগুলো,

তোমার মন অতি দুরে যমের নিকট গিয়েছে (১),
তোমার যে মন অতিদূরে স্বর্গে চলে গিয়েছে (২),
তোমার যে মন পৃথিবীর চতুর্দিকে গিয়েছে (৩),
তোমার যে মন পৃথিবীর চতুর্ভাগে গিয়েছে (৪)। 

একইভাবে বাকী মন্ত্রগুলোতেও বলা হচ্ছে এই মন বিভিন্ন দিকে ও স্থানে গিয়েছে। 


ঋগ্বেদ সংহিতা (১০/৫৮)

তাহলে এই সুক্তের তৃতীয় ও চতুর্থ মন্ত্রে মনকে বলা হচ্ছে পৃথিবীর চতুর্দিকে চলে গেছে৷ এখানে যদি পৃথিবীর চতুষ্কোণেও বলা হয় তবুও ত সমস্যার কিছু নেই কারণ পৃথিবীর চারটি কোণেও চারটি দিকের নির্দেশ করে। আমরা কম্পাসেও যখন দিক নির্ণয় করি তখন পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ চারটি দিক পাই। তাছাড়া কৌণিক দিকেও উত্তর-পূর্ব বা ঈশাণ, দক্ষিণ-পূর্ব বা অগ্নি, দক্ষিণ-পশ্চিম বা নৈঋত বা উত্তর-পশ্চিম বা বায়ু এই চারটি দিকই পাই।

এই ১০/৫৮/৩ মন্ত্রের সায়ণভাষ্যের অনুবাদেও পৃথিবীর চারদিকের উল্লেখই পাওয়া যায়। সেখানেও সম্পূর্ণ পৃথিবীর আকৃতি (Outer Shape) চার কোণাকার বলা হয় নি। তাছাড়া বেদভাষ্যের উপর ভারত সরকার কর্তৃক "পদ্মশ্রী" উপাধিপ্রাপ্ত RL Kashyap তাঁর ঋগ্বেদ সংহিতার ১০.৫৮.৩ মন্ত্রের অনুবাদে Four Directions এর কথাই বলেছেন। 



গ্রিফিতের অনুবাদে ভুল যেটা হয়েছে সেটা হলো তিনি Four-cornered earth না লিখে Four corners of the earth লেখা উচিত ছিলো যেটা তিনি পরের মন্ত্রেই করেছেন Four Quarters of the world. তাহলে মূল সমস্যা বেদমন্ত্রে নয় বরং বৈদিক পরম্পরাহীন গ্রিফিতের অনুবাদে ছিলো।



অনুবাদঃ গ্রিফিত

দ্বিতীয় পয়েন্টঃ অতঃপর সনাতন শাস্ত্রে অনধিকারীরা প্রশ্ন তুলে শুক্ল যজুর্বেদীয় শতপথ ব্রাহ্মণের একটি মন্ত্রে (২/১/২/২৯) নাকি পৃথিবীর আকৃতি ইটের মতো চারকোনা বলা হয়েছে। সনাতন শাস্ত্রে অধিকারী ও অনাধিকারী একটা বিষয় রয়েছে যেখানে শুদ্ধ সংস্কারে যথাযথ প্রক্রিয়ায় শাস্ত্রচর্চা করতে বলা হয়েছে অন্যথায় অনধিকারীর হাতে শাস্ত্র গেলে সেখানে অনর্থ হওয়ার সুযোগ বেশি৷ তাই একজন মোবাইল মেকানিক ব্রাদার রুহুলের পক্ষে বা সংস্কারহীন সমাজীদের (ইন্দো আর্য) পক্ষে বেদের সংহিতা ও ব্রাহ্মণগ্রন্থ বুঝতে পারা আকাশকুসুম কল্পনা মাত্র। ব্রাহ্মণ গ্রন্থের অপপ্রচার খণ্ডনের পূর্বে ব্রাহ্মণ গ্রন্থ সম্পর্কে একটা ছোট ধারণা দিয়ে দেওয়া আবশ্যক। 

সংহিতা এবং ব্রাহ্মণ উভয় মিলেই বেদ। সংহিতা অংশে প্রধানতঃ বিভিন্ন দেবতার স্তুতি এবং যজ্ঞে প্রযুক্ত বিভিন্ন মন্ত্র রয়েছে। কোন মন্ত্র কোন যজ্ঞে বা কোন কর্মে বিনিয়োগ করতে হবে, কোন কামনা পূর্তির জন্য কোন যজ্ঞ করতে হবে, কোন যজ্ঞে কোন দ্রব্য কীভাবে প্রয়োগ করতে হবে– এই সমস্ত বিষয় ব্রাহ্মণ অংশে চর্চিত হয়েছে।

শুক্ল যজুর্বেদ বাজসনেয়ি সংহিতা নামে পরিচিত। এই সংহিতার একটি ব্রাহ্মণ যথাঃ শতপথ ব্রাহ্মণ। শতপথ ব্রাহ্মণ কলেবরে সকল ব্রাহ্মণরাজির মধ্যে সবচেয়ে বিশাল এবং গুরুত্বেও শ্রেষ্ঠ। এই ব্রাহ্মণ শত অধ্যায়ে বিস্তৃত তাই এর নাম শতপথ ব্রাহ্মণ।

অনধিকারীদের উল্লেখিত রেফারেন্সে (শতপথ ব্রাহ্মণঃ ২/১/২/২৯) আসলে কি আছে সেটা একটু দেখে নেওয়া যাক। অর্থবাদের (অনধিকারীরা যদিও অর্থবাদ বুঝবে না) অংশটুকু বাদ দিয়ে যজ্ঞবেদি নির্মাণের বিষয়টা খেয়াল করলে দেখা যায়।

তাঁরা (ঋষিরা) এখন বলেন - "কি কারনে অগ্নি (অগ্নিবেদী) এর (পৃথিবীর) সৃষ্টি? এখন এই পৃথিবী হলো চতুষ্কোণ, কেননা, দিক্ - সমূহ হলো তার কোণসমূহ। এজন্যই ইষ্টক গুলো হয় চতুষ্কোণ বিশিষ্ট, কেননা, সকল ইষ্টক হয় এই পৃথিবীর রচনাশৈলী অনুসারে।"


(শতপথ ব্রাহ্মণঃ ২/১/২/২৯)

এখানে ভালো করে পুরো মন্ত্রটা পড়লেই স্পষ্ট হয় এখানে মূলত পৃথিবীর আকৃত নয় বরং পৃথিবীর দিকসমূহের কথা বলা হচ্ছে। যজ্ঞবেদি নির্মাণ করার সময় চতুষ্কোণ হতে হয়। কেন চতুষ্কোণ করতে হয় তার একটি ধারণা দেওয়া হয় এই ব্রাহ্মণ মন্ত্রে। ইষ্টক বা ইটকে দশদিক দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় যেখানে চারটা কোণ রয়েছে। একইভাবে এই পৃথিবীরও চারকোণ রয়েছে যথা ঈশান, অগ্নি, নৈঋত, বায়ু। এখন পৃথিবীর দশদিক ও চতুষ্কোণকে কি পৃথিবীর আকৃতি (Outer Shape) হিসেবে ধরা হয় নাকি এই চতুর্দিকের ধারণাকে অবৈজ্ঞানিক বলা হয়? ইষ্টক কি ও যজ্ঞবেদির সাথে এর সম্পর্ক কি সেটা আর‌ও স্পষ্ট বুঝতে শুক্ল যজুর্বেদীয় শতপথ ব্রাহ্মণের ২/১/২/৩০নং মন্ত্র দ্রষ্টব্য।

তাছাড়া এরা হয়তো জানে না যে যজ্ঞবেদি নির্মাণ একটি জ্যামিতিক প্রক্রিয়া। জ্যামিতিতে যেমন গোলক (পরিমণ্ডল)  রয়েছে তেমন ঘণবস্তুও (ইট) রয়েছে। বৃত্ত, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বৃত্তীয় কোণ, চতুষ্কোণ এগুলো সব জ্যামিতিক বিষয়। যজ্ঞবেদি নির্মাণের সাথে জ্যামিতির রয়েছে প্রাচীন সম্পর্ক। 

আচার্য বৌধায়ন ছিলেন খ্রীষ্টপূর্ব ৮০০ শতকের একজন ভারতীয় গণিতবিদ যিনি প্রায় ৩ হাজার বছর আগেই গণিতের উপর অভূতপূর্ব কাজ করে গেছেন। তাঁর "বৌধায়ন সূত্র" নামক একটি অসাধারণ গ্রন্থ রয়েছে। গবেষকদের মতে 

বৌধায়ন সূত্রের সূত্রগুলো কৃষ্ণ যজুর্বেদের তৈত্তিরীয় শাখার কল্পসূত্রের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তিনি ছিলেন একজন বৈদিক পরম্পরার ঋষি তাই বৈদিক শাস্ত্রমতে যজ্ঞবেদি নির্মাণের নিখুঁত মাপঝোঁককে মাথায় রেখে তিনি শুল্বসূত্র নামক গ্রন্থ রচনা করেন যা পরবর্তীতে ত্রিকোণমিতির চর্চাকে অনেকদূর নিয়ে যায়। বৈদিক কল্পসূত্রসমূহের মধ্যে বৌধায়ন গৃহ্যসূত্র, বৌধায়ন ধর্মসূত্র, বৌধায়ন শুল্বসূত্র, বৌধায়ন শ্রৌতসূত্র রয়েছে।

যজ্ঞবেদি বা মন্দিরের কৌণিক বিন্দু নির্ণয়ে শুধু ত্রিভুজ নয় সাথে বৃত্ত সম্পর্কেও সঠিক ধারনা দরকার হয়। বৃত্ত নিয়ে কাজ করলে পাই (π)-এর সঠিক মান নির্ণয় প্রয়োজন। কিন্তু পাই (π)-এর মান নির্ণয় করা এতো সহজ বিষয় ছিলনা। তবে আচার্য বৌধায়ন এই পাই (π) -এর মান নির্ণয় করেন একেবারে অন্য পদ্ধতিতে। তিনি পাই (π) -এর মান নির্ণয় করতে বৃত্ত নয় বরং চতুর্ভুজকে ব্যবহার করেন। চতুর্ভুজের কর্ণকে বৃত্তের ব্যাস ধরে তিনি সেই তৈরি হওয়া বৃত্তের পরিধির তুলনা করে তিনি পাইয়ের মান দেখান ৩। তবে তিনি ৩ দশমিকের পর আরও কিছু আনুমানিক মান দেখান যা পঞ্চম শতকের বৈদিক আচার্য অার্যভট্টের নির্ণীত মান 3.1416 (প্রায়) এর খুব কাছাকাছি। 

চতুর্ভুজ ও বৃত্ত নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অাচার্য বৌধায়ন আরেকটি জটিল সমস্যার সমাধান করেছিলেন যে এমন একটি বৃত্ত তৈরী করা যার ক্ষেত্রফল একটি বর্গের ক্ষেত্রফলের সমান হবে। একে বলা হয় "Cycling of the Square"

তথ্যসূত্রঃ ১/ বৌধায়ন শুল্বসূত্র, ২/ Plofker, Kim (2007). Mathematics in India, ৩/ Sacred Books of the East, vol.14 – Introduction to Baudhayana, ৪/ Patrick Olivelle, Dharmasūtras: The Law Codes of Ancient India, (Oxford World Classics 1999)


🔹 প্রশ্নঃ বায়ু পুরাণে কি পৃথিবীর আকৃতি পদ্মফুলের মতো বলা হয়েছে? 

🔸 উত্তরঃ মোবাইল মেকানিক রুহুল ব্রাদার হোক বা অনার্য সমাজী এদের সকলেরই একমাত্র অস্ত্র শাস্ত্রের খণ্ডিতাংশ। বৈদিক শাস্ত্রসমূহ থেকে মন্ত্র বা শ্লোকের খণ্ডিতাংশ নিয়ে এরা নিজেদের মনের মতো বিকৃত করে প্রচার করতে থাকে এবং সাধারণ সনাতনীদের বিভ্রান্ত করতে থাকে। 

খণ্ডনঃ মোবাইল মেকানিক ব্রাদার রুহুল তার ভিডিওতে দেখায় বায়ু পুরাণের ৩৪ অধ্যায়ের ৪৩-৪৪ শ্লোকে নাকি পৃথিবীর আকৃতি পদ্মের মতো বলা হয়েছে! অর্থাৎ এই অধ্যায়ের যে দু'টো শ্লোক দেখালে তার জন্য অপপ্রচার করতে সুবিধা হয় সে ততটুকুই দেখিয়েছে। এই অপপ্রচারটা অনার্য সমাজীরাও করে। বায়ু পুরাণের ৩৪/৪৩-৪৪ শ্লোকদ্বয়ে বলা হয়েছে, "এই বনবৃক্ষ নিয়ে এই পৃথিবীই সমুৎপন্না হন"। এই শ্লোকের উপর ভিত্তি করে সে দাবী করে দিলো পৃথিবীর আকৃতি পদ্ম ফুলের মতো? সে কি জানে সনাতন শাস্ত্রে পৃথিবী বলতে ভূভাগকেও বোঝায় আবার গ্রহরূপ পৃথিবীকেও বোঝায়। আমরা জানি এই পৃথিবী একসময় ছিলো সম্পূর্ণ জলমগ্ন, সেখান থেকে ধীরে ধীরে ভূভাগ জাগ্রত হয় এবং সেটা পদ্মাকারে হয়। পদ্মাকর কিভাবে? বায়ুপুরাণের এই অধ্যায়েই তা পরিস্কার করা আছে কিন্তু অপপ্রচারকারীরা ত সম্পূর্ণ অধ্যয়ন করে দেখে না। অপপ্রচারই যাদের মূল উদ্দেশ্য তাদের চোখে সত্যটা ধরা দিবে কেন? যাইহোক আমরাই পরিস্কার করে মর্কটদের চোখে ঢুকিয়ে দিচ্ছি। ৪৫নং শ্লোকেই কিন্তু বলা হয়েছে, "হে দ্বিজগণ মন দিয়ে শুনুন, এই লোকপদ্মের বিস্তারিত আলোচনা করছি।" কিন্তু মর্কটগুলো পরের অংশ না পড়েই অপপ্রচারে প্রবৃত্ত হয়ে গেছে। 

বায়ুপুরাণের ৩৪ অধ্যায়ের ৪৬নং শ্লোকে বলা হয়েছে, 

"এই পৃথিবীর চারটি মহাদ্বীপ এই লোকপদ্মের পত্রের (পাপড়ি) মতো এবং মহাবল মেরু এর কর্ণিকার (বৃন্ত) মতো।" 


(বায়ু পুরাণের ৩৪/৩৮-৪৬)

অর্থাৎ এখানে স্পষ্টই বলে দেওয়া হচ্ছে যে পৃথিবীর মেরু অঞ্চলকে কেন্দ্র করে যে চারটি মহাদ্বীপ (বনবৃক্ষসম্পন্ন) জাগ্রত হয়েছে সেগুলোকেই পদ্মের চার পাপড়ির সাথে তুলনা করা হয়েছে। এরা ত কাব্যের রূপক অর্থ ধরতে পারে না। কে জানে এরা হয়তো "পূর্ণিমার চাঁদ যেন জ্বলসানো রুটি" পঙতি শুনে চাঁদকে আসলেই রুটি ভেবে বসে থাকে কিনা! 

বায়ুপুরাণের ৩৪ অধ্যায়ের ৪৬নং শ্লোকের মতিলাল বানারসিদাস প্রকাশনীর  ইংরেজি অনুবাদেও বলা হয়েছে, 

"The famous four great continents stationed on patels and the powerful Meru is stationed on the Pericap." 

অর্থাৎ স্পষ্টভাবেই মেরু অঞ্চলকে কেন্দ্র করে চারটি মহাদ্বীপকেই লোকপদ্মের পত্রের সাথে তুলনা করা হয়েছে, পৃথিবীর আকৃতিকে (Outer Shape) পদ্মের মতো বলা হয় নি। 

এই চার মহাদ্বীপ সম্পর্কে আরও স্পষ্ট করা হয় ৫৬-৫৭নং শ্লোকদ্বয়ে। ইংরেজি পড়তে পারলে মর্কটকে পড়ার অনুরোধ করা হলো৷ এই চারটি মহাদ্বীপের নামকরণও করা হয় যথাঃ ভদ্রাশ্ব, ভারত, কেতুমালা ও উত্তরকুরু। 

আধুনিককালেও উত্তরমেরু কেন্দ্রিক যে ম্যাপ পাওয়া যায় তার (Arctic Ocean) চারপাশে চারটি মহাদ্বীপ/মহাদেশ পাওয়া যায় যথাঃ উত্তর আমেরিকা, এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা। 

মার্কণ্ডেয় পুরাণের পঞ্চপঞ্চাশৎ (৫৫) অধ্যায়েও পৃথিবীকে (ভূভাগ) লোকপদ্মের সাথে তুলনা করার  বিষয়ে স্পষ্ট আলোচনা রয়েছে। 





©SPS শাস্ত্র গবেষণা কমিটি
Sanatan Philosophy and Scripture (SPS)





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ