বেদবীর আর্য ও অনার্যদের আস্ফালন নিরসন।।


বেদবীর আর্য ২০১৯ সালের দিকে "The Chronology of India" নামে একটি গবেষণাধর্মী বই লিখেন যেখানে তিনি ভারতের ১৬,০০০ বছরের ক্রনলজিক্যাল ডাটা ও ইতিহাস তুলে ধরেন। এতে করে "Arya Invasion Theory" অনেকাংশে খণ্ডন হয়ে যায়। যাইহোক আজকের আলোচ্য বিষয় ভিন্ন। বিষয় হলো অনার্য সমাজীদের একাংশ যারা টাউটবীর নামে ভালো খ্যাতি পেয়েছে তাদের খণ্ডিত অপপ্রচারের জন্য। তাদেরই একটি নতুন অপপ্রচারের নিরসন করা হবে আজ। তারা সম্প্রতি লাইভ করে দাবী করেছে তারা নাকি বেদবীর আর্যের বই থেকে SPS এর "বেদোক্ত মৎস অবতার" ব্লগের খণ্ডন করে দিয়েছে। কেন? কারণ SPS নাকি বেদবীরজ্বীর বই থেকে "বেদোক্ত মৎস অবতারের" প্রমাণ দিয়েছে। সেই নয়ছয় লাইভের লিংক নিয়ে কিছু অন্ধ অনুসারী ক'দিন ধরে খুব লাফাচ্ছে। 

যাইহোক, টাউটবীরের বাকপটু এক স্বঘোষিত শাস্ত্রবিশারদ প্রায়ই লাইভে এসে এসব মিথ্যাচার করে সাধারণ হিন্দুদের বিভ্রান্ত করে। আজকে সেটাই আরেকবার খোলাসা করে দিচ্ছি এবং বেদবীরজ্বীর বই থেকেই প্রমাণ দিচ্ছি যে ভারতের ক্রনলজিক্যাল ইতিহাসে শ্রীবিষ্ণুর বামন অবতার ও নৃসিংহ অবতারের ঘটনাও সত্য।

প্রথমত টাউটবীরের বাকপটু শাস্ত্রবিশারদের দাবী ছিলো আমরা বেদবীর আর্যের বই থেকে বেদোক্ত মৎস অবতার প্রমাণ করেছি। এটা সম্পূর্ণ ভুল ও তার মিথ্যা দাবী। এই একই দাবী এই বাকপটুর আরেক অনুসারী "জাগো সনাতনী" নামক একটি ফেসবুকে গ্রুপে তার ফেইক আইডি (অভিজিৎ রায়) দিয়ে উত্থাপন করে এবং আমাদেরকে আলোচনার আহবান জানায়। আমি নিজে সেখানে অংশগ্রহণ করে তাকে বেদবীর আর্যের বই থেকেই চরম ধোলাই দেই এবং তার উত্থাপিত সবগুলো দাবীর খণ্ডন বেদবীর আর্যের বই থেকেই দেই। সম্পূর্ণ আলোচনা ও আলোচনার কন্টেক্সট হুবুহু স্ক্রিনশটসহ আমাদের ব্লগে সংরক্ষিত রাখা আছে। যে-কেউ চাইলেই পড়তে পারেন। লিংক দেওয়া হলো। 

বেদবীর আর্য, বেদোক্ত (শতপথ ব্রাহ্মণ) মৎস অবতার ও পুরাণ নিয়ে বর্জ্যসমাজের ছলচাতুরী ও শঠতার জবাব।।

এতোদিন পর সেই পুরনো কাসুন্দি নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে এসেছে টাউটবীরের বাকপটু শাস্ত্রবিশারদ।ুসে মনে মনে মনকলা খাওয়ার মতো অন্ধ অনুসারীদের দেখিয়ে দিলো যে SPS কে হারিয়ে বিশ্বজয় করে ফেলেছে সে। তাই এবার মৎস অবতারের মূল ঘটনা, সেটা নিয়ে টাউটবীরের ব্লগে জ্যোতিষীয় বাটপারি ও বেদবীরজ্বীর বই সব বিষয়ে একটা চুড়ান্ত সমাধান দেওয়া হবে। সবাই একটু মনযোগ দিয়ে পড়বেন ব্লগটা। পাশাপাশি টাউটবীরের বাকপটু শাস্ত্রবিশারদকেও বলবো ব্লগের আদ্যোপান্ত প্রতিটি পয়েন্ট ভালো করে পড়ে তারপর বস্তাপঁচা লাইভের কথা ভাববেন। হুদাই লাফালেই খণ্ডণ হয় না। 

আমরা কি বেদবীরজ্বীর বই থেকে মৎস অবতারের প্রমাণ দিয়েছি?

না। কারণ মৎস অবতারের প্রামানিকতা আমাদের বৈদিক শাস্ত্র (শুক্ল যজুর্বেদীয় শতপথ ব্রাহ্মণ) ও ইতিহাস (মহাভারত) ও পুরাণাদি (মৎস পুরাণ) গ্রন্থেই রয়েছে এবং আমরা সেখান থেকেই প্রমাণ দিয়েছি। এমনকি BORI প্রকাশিত মহাভারতের যে ক্রিটিকাল এডিশনকে অনার্যবীর অধিক মান্য করে সেখানেও মৎস অবতারের সম্পূর্ণ ঘটনা স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।




[Critical Edition, Sec-37, Chapter - 482(185)]

আমদের ব্লগের লিংক দিয়ে দিলাম সেটা নিজেরাই যাচাই করে নিতে পারেন।

মৎস্য অবতার ও মনুর মহা-প্লাবনের প্রামাণিকতা।। 

তাহলে এই ব্লগে (SPS এর মৎস অবতার নিয়ে ব্লগে) বেদবীর আর্যের বইয়ের প্রসঙ্গ কিভাবে এলো? 

এখনই পরিস্কার করছি কিভাবে অনার্যবীরের গালে চপেটাঘাত করতে বেদবীর আর্যের বইয়ের প্রসঙ্গ এলো! 

অনার্য সমাজীরা মূলত বেদসিদ্ধ অবতারবাদ মানে না তাই শুক্ল যজুর্বেদীয় শতপথ ব্রাহ্মণে উল্লেখিত মৎস অবতারকে যোগেশচন্দ্র বিদ্যানিধির গণিত জ্যোতিষকে ব্যবহার করে তাঁর লেখা "পৌরাণিক উপাখ্যান" থেকে মৎস অবতার বিষয়ক জ্যোতিষ ব্যাখ্যাকে হুবহু মেরে দিয়েছে তাদের বস্তাপঁচা ব্লগে। অর্থাৎ মৎস অবতারকে চাঁদ তারা নক্ষত্র বানিয়ে দিয়েছে। 

                                                        

সেটার খণ্ডন আমরা যোগেশচন্দ্র বিদ্যানিধির "বেদের দেবতা ও কৃষ্টিকাল" থেকেই দিয়ে দেই আমাদের ব্লগে এবং প্রমাণ করি কোন ঘটনার জ্যোতিষীয় ব্যাখ্যা দেওয়ার অর্থ এই নয় যে সেটা গ্রহ-নক্ষত্র হয়ে যাওয়া বরং কোন ঘটনার জ্যোতিষীয় ব্যাখ্যা ঘটনার প্রামাণিকতা আরও শক্তিশালী করে। উপরে উল্লেখিত ব্লগের লিংকটা ভালো করে পড়লে ইতোমধ্যে প্রমাণটা পেয়ে যাওয়ার কথা। 

অতঃপর জোচ্চরগুলো মনুর মহাপ্লাবনকে অবান্তর ও মিথ দাবী করতে নাস্তিকদের মুক্তমনা ব্লগ থেকে কাটপেস্ট করে সেটাকে আব্রাহামিক ভাবধারার নুহের প্লাবনের সাথে তুলনা করে একটা পোস্ট করে ভুজুংভাজুং লজিক দিয়ে। 

                                     

                                     

এখন সেটার ক্রনলজিক্যাল ও প্রত্নতাত্ত্বিক খণ্ডন দিতেই আমরা বেদবীর আর্যের The Chronology of India বইটির প্রসঙ্গ আনি এবং শুধু এটাই নয় বরং মনুর মহাপ্লাবন যে সত্য ঘটনা সেটা ASI এর সাবেক ডিরেক্টর বি.বি. লালের একটি গবেষণাপত্র থেকেও দেখানো হয়। 

তাহলে বিষয়টা স্পষ্ট হোক যে আমরা বেদবীর আর্যের বই থেকে বেদোক্ত শতপথ ব্রাহ্মণে উল্লেখিত মৎস অবতারের প্রামানিকতা নয় বরং অনার্য টাউটবীরের উত্থাপিত মনুর মহাপ্লাবন সম্পর্কিত সংশয় দূর করেছি এবং সেক্ষেত্রে প্রত্নতাত্ত্বিক ও ক্রনলজিক্যাল প্রমাণ তুলে ধরেছি।

এখন শাস্ত্রোক্ত খণ্ডন বাদ দিয়ে টাউটবীর প্রথমে দাবী তুলে বেদবীর আর্যের বইয়ে মৎস অবতারের প্রমাণ নেই এবং তিনি একজন আর্য সমাজী তাই SPS এর ব্লগ খণ্ডন হয়ে গেলো। সেই জবাব তাদেরকে কি চরমভাবে দেওয়া হয়েছিল তা ত উপরে উল্লেখিত ব্লগে আপনারা পেয়েই গেছেন। এবার তারা একই কাসুন্দি নিয়ে আবার এসেছে এবং এবার এসেছে নতুন একটা দাবী নিয়ে যে বেদবীর আর্য মৎস অবতারকে মৎস জনপদের রাজা বলেছেন তাই আবার "বেদোক্ত মৎস অবতার" খণ্ডন হয়ে গেলো। কি হাস্যকর দাবী! 😄

যাইহোক গতবারের মতো এবারও বেদবীর আর্যের বই দিয়েই আবার ধোলাই দেওয়া হবে। এদের যদি মিনিমাম লজ্জা থাকে তবে এই বিষয়ে আর বস্তাপঁচা মিথ্যাচার দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াবে না।

বেদবীর আর্যের "The Chronology of India" এর বিশ্লেষণ...

বেদবীর আর্যের এই বইটি কোন শাস্ত্রগ্রন্থ নয় এবং তিনিও শাস্ত্রীয় ধারায় গ্রন্থটি লিখেন নি। তিনি তাঁর গ্রন্থে সংহিতা, ব্রাহ্মণ ও পুরাণাদি শাস্ত্রকে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের কালানুক্রমিক ডাটা সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছেন মাত্র। Chronology এর বাংলা প্রতিশব্দ হলো কালানুক্রম। অর্থাৎ ভারতের কালানুক্রমিক ইতিহাসকে বিভিন্ন গ্রন্থ যেমন বেদ, পুরাণ, জ্যোতিষ ও প্রত্নতত্ত্বের আলোকে মনুর মহাপ্লাবন থেকে মহাভারতের যুগ পর্যন্ত তুলে ধরেন তিনি। তাই গ্রন্থটির নামও "The Chronology of India, Manu to Mahabharata". তাই এই গ্রন্থে খুঁজতে হবে ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহ এবং তার সময়কাল, এখানে শাস্ত্র সিদ্ধান্ত খুঁজতে যাওয়া অবান্তর। যেমন ASI এর সাবেক প্রধান S.R. Rao এর "The Lost City of Dvārakā" তে আমরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নয় বরং দ্বারকার রাজা শ্রীকৃষ্ণের হারিয়ে যাওয়া দ্বারকা নগরীর তথ্য পাবো। প্রত্নতাত্ত্বিক ফাইন্ডিংসে দ্বারকা নগরীর অস্তিত্ব প্রমাণিত হবে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্ত্ব নয়। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্ব প্রমাণ করার জন্য মহামুনি ব্যাসদেব রচিত মহা গ্রন্থ মহাভারত রয়েছে। একইভাবে মৎস অবতার প্রমাণ করার জন্য শুক্ল যজুর্বেদীয় শতপথ ব্রাহ্মণ, ব্যাসদেব রচিত মহাভারত এবং মৎস পুরাণই যথেষ্ট। এছাড়াও অনার্য সমাজীদের অত্যন্ত মান্য মহাভারতের ক্রিটিকাল এডিশনেও মৎস অবতারের বিস্তৃত বর্ণনা রয়েছে। SPS কেবলমাত্র বেদবীর আর্যের একটি Chronological Study থেকে মনুর মহাপ্লাবনের ঘটনার সত্যতা গ্রহণ করেছে যেটা অনার্য সমাজীরা নাস্তিক ব্লগ কপি করে নুহের মহাপ্লাবন বানিয়ে দিয়েছিলো। এবং শুধুমাত্র বেদবীর আর্যের বই-ই নয় ASI এর সাবেক প্রধান B.B.Lal এর স্টেটমেন্টও দেখিয়েছি আমরা।

বেদবীর আর্য কি আর্য সমাজের? যদি তিনি আর্য সমাজের হয় তবে SPS কেন উনার বই থেকে রেফারেন্স দেখালো?

বেদবীর আর্য একজন আর্য সমাজী কিনা সেটা জানি না তবে উনার গুরু আর্য সমাজী পণ্ডিত। SPS উনার বই থেকে রেফারেন্স নিয়েছে কারণ তিনি অনার্য সমাজীদের মতো প্রক্ষিপ্তবাদী নয়৷ তিনি ভারতের ক্রনলজিক্যাল ডাটা সংগ্রহের জন্য কোন প্রামাণ্য শাস্ত্রকেই অস্বীকার করেন নি বরং অনার্যদের অমান্য পুরাণাদি শাস্ত্র থেকেই বেশি ডাটা নিয়েছেন। প্রায় ৩০০+ বার পুরাণের রেফারেন্স মেনশন করেছেন। অর্থাৎ ভারতের ১৬,০০০ বছরের ক্রনলজিক্যাল স্টাডি যে ১৮ পুরাণ ছাড়া একদম অসম্ভব সেটা আর্য সমাজী গুরুর শিষ্য বেদবীর আর্যও বুঝেছিলেন। তবে যেকোনো ডাটার অথেনটিকেশনের জন্য তিনি অধিক প্রাচীন টেক্সট তথা সংহিতা ও ব্রাহ্মণকে অধিক প্রামাণ্য মেনেছেন। তিনি ১৮ পুরাণকে মহামুনি ব্যাসদেব রচিতও মেনেছেন এবং মহাভারতের যুগে পুরাণাদি শাস্ত্র যে বৈদিক শিক্ষার অংশ ছিলো সেটাও তিনি ক্রনলজিক্যাল স্টাডিতে দেখান। এটা তিনি একাধিকবারই দেখান। তাহলে বেদবীর আর্যের বই থেকে রেফারেন্স নেওয়া যাবে না কেন? 

তাহলে বেদবীর আর্য যে মৎস অবতারকে মৎস জনপদের রাজা দাবী করেছেন সেটা কি SPS মানবে? 

এই বিষয় আগেই পরিস্কার করা হয়েছে যে মৎস অবতার প্রমাণ করার জন্য শুক্ল যজুর্বেদীয় শতপথ ব্রাহ্মণ ও মহাভারতের মতো প্রামাণ্য গ্রন্থই রয়েছে এবং সেটা অনার্যদের অতি মান্য মহাভারতের ক্রিটিকাল এডিশনও [Sec - 37, Chapter - 482(185)] রয়েছে। SPS কেবল অনার্য সমাজীদের দাবীকৃত নুহের মহাপ্লাবন খণ্ডনে মনুর মহাপ্লাবনের ক্রনলজিক্যাল এভিডেন্স হিসেবে বেদবীর আর্যের বইয়ের রেফারেন্স দিয়েছে।

তাহলে বেদবীর আর্য যে মৎস অবতারকে রাজা বানিয়ে দিলেন সেটার কি ব্যাখ্যা দিবে SPS? 

অবশ্যই এর ব্যাখ্যা দেওয়া হবে। শুধু মৎস অবতারের ঘটনাই নয় বরং বামন অবতার ও  নৃসিংহ অবতারের ঘটনাগুলোও বেদবীর আর্য তার বইয়ে দেখান এবং এগুলোকে তিনি সত্য যুগের সময়কাল হিসেবেই দেখান। এমনকি ঋগ্বেদের দশরাজার যুদ্ধও তিনি উল্লেখ করেন ভারতের ক্রনলজিক্যাল স্টাডিতে। অনার্য সমাজীরা এবার ঋগ্বেদের দশরাজার যুদ্ধকেও মেনে নিক এবং বেদে ইতিহাস নেই এই অপদাবী তুলে নিক। তিনি মূলত অলৌকিকতাকে বাদ দিতে গিয়ে মৎস অবতারকে বানিয়ে দেন মৎস রাজা এবং দেখান মহাপ্লাবন থেকে মৎস যখন মনুকে রক্ষা করেন তখন তাকে সহায়তা করেন বিষ্ণু, আবার বামন অবতারকে বানিয়ে দেন বিষ্ণুর বংশধর যেখানে আবার দেখান হিরণ্যকশিপুকে বধকারী স্বয়ং বিষ্ণু। অর্থাৎ অলৌকিকতাকে বাদ দিতে গিয়েও তিনি এসব ঘটনায় শ্রীবিষ্ণুর সম্পৃক্ততাকে বাদ দিতে পারেন নি। তবে তিনি কিন্তু তার নিজস্ব ইন্টারপ্রেটেশনগুলো করার সময় Seems, Perhaps, Probably এই শব্দগুলোই ব্যবহার করছেন। অর্থাৎ তার দাবীই যে সত্য সেটাও তিনি দাবী করেন নি। অলৌকিকত্ব বাদ দেওয়া বিষয়টা শুধুমাত্র উনার নিজস্ব ইন্টারপ্রেটেশন। এগুলোর কোন টেক্সচুয়াল এভিডেন্স নাই অর্থাৎ মৎস রাজার কথা ত কোন শাস্ত্রে (শুক্ল যজুর্বেদীয় শতপথ ব্রাহ্মণ, মহাভারত ও পুরাণাদি শাস্ত্র) নেই, এগুলো উনি জাস্ট ধারণা করছেন। এমনকি তিনিই এক জায়গায় মৎস রাজাকে আবার মৎস ঋষিও বলেছেন। এখন উনার ধারণা সবসময় সঠিক হবে, এমন তো কোনো কথা নাই। কিন্তু ভারতের ক্রনলজিক্যাল বা কালানুক্রমিক অনুসন্ধানে তিনি সংহিতা, ব্রাহ্মণ ও পুরাণের রেফারেন্স গুলো ব্যবহার করছেন, সেগুলো তো উনার মনগড়া ধারণা না, টেক্সচুয়াল এভিডেন্স আছে ওই গুলোর। তাই ইন্টারপ্রেটেশন যাই হোক, মূল ঘটনা তো মানতেই হবে। অর্থাৎ মৎস অবতার, নৃসিংহ অবতারে হিরণ্যকশিপু বধ, বামন অবতারে রাজা বালির দমন এগুলোর টেক্সচুয়াল এভিডেন্স রয়েছে এবং এগুলো ভারতে ঘটেছে। বেদবীর আর্য তার গবেষণায়ও এগুলো পেয়েছেন এবং কালানুক্রমিক বর্ণনায় সময়কালসহ তুলেও ধরেছেন। এখন তিনি তার নিজস্ব ইন্টারপ্রেটেশনে মৎস অবতারকে মৎস রাজা দাবী করুক বা বামন অবতারকে শ্রীবিষ্ণুর বংশধর সেটার কোন প্রাচীন টেক্সচুয়াল এভিডেন্স নেই বিধায় ‍সেগুলো মানতে আমরা বাধ্য নই। অনার্য সমাজীরা এটা নিয়ে লাফানোর কি আছে? ওরা বরং টেক্সচুয়াল এভিডেন্স থেকে এটা মেনে নিক ঋগ্বেদে যে দশরাজার যুদ্ধের উল্লেখ আছে এবং সেটা ভারতের ঐতিহাসিক ঘটনাও। এই দশরাজার যুদ্ধ নিয়ে কিন্তু অনার্যদের অত্যন্ত মান্য BORI এর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলেও ভিডিও রয়েছে। 

ঋগ্বেদের দশরাজার যুদ্ধ।।

বেদবীর আর্যের বই থেকে কিছু প্রয়োজনীয় স্ক্রিণশট।। উপরে বইটির ডাউনলোড লিংকও দিয়েছি যাতে নিজেরাই যাচাই করতে পারেন। 

                                       






বেদবীর আর্য যে ক্রনলজিক্যাল স্টাডি করার সময় শাস্ত্রের বিভিন্ন চরিত্রকে মানবীয় রূপদান করেছেন সেটা ত The Chronology of India বইয়ের ভূমিকার প্রথম লাইনেই পরিস্কার করেছেন "Ancient Indian History starts with Brahma, the founder of vedic sciences and his son Sayambhuva Manu." অর্থাৎ তিনি প্রজাপতি ব্রহ্মাকেও মানবীয় রূপ দেন। 

এছাড়া ধ্রুবকেও বাদ দেওয়া হয় নি ভারতের ক্রনলজিক্যাল ডাটা থেকে। ধ্রুব তারার নামকরণ যে রাজা ধ্রুবর নামেই সেটাও পরিস্কার করা হয় এবং এই ঘটনা ঘটে ঋগ্বেদের যুগের পূর্বে যা ঋগ্বেদেও উল্লেখ রয়েছে। অনার্যবীর বরং এসব নিয়ে মাথা ঘাটাক যে বেদে ইতিহাসের সকল ইংগিত কিভাবে এসেছে! 


তাই পরিশেষে বলবো অনার্যবীর মৎস রাজা নিয়ে না লাফিয়ে বরং মৎস অবতার, বামন অবতার, নৃসিংহ অবতার ও দশরাজার যুদ্ধের টেক্সচুয়াল এভিডেন্সগুলো মেনে নিক এবং ভারতের ক্রনলজিতে এই ঘটনাগুলোর প্রামাণিকতাও মেনে নিক। এরপরও যদি বেদবীর আর্যের বই নিয়ে লম্ফঝম্প করে তবে সরাসরি SPS এর সাথে ডিবেটে আসতে পারে নিজের ঘরে লাইভ না বানিয়ে। 

©SPS শাস্ত্র গবেষণা কমিটি
Sanatan Philosophy and Scripture (SPS)





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ