পশ্চিমবঙ্গে ও তথাকথিত আধুনিক সমাজে 'কন্যাদান' নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের তথাকথিত আধুনিক সমাজ সনাতনের পরম্পরাগত সকল প্রাথাকেই কুসংস্কারের অজুহাত দেখিয়ে বাতিল করে দিতে পারলে বাঁচে। আমি বলছি না যে সনাতনে পরম্পরাগত কুসংস্কার নেই কিন্তু সে সংখ্যাটা খুব বেশী নয় বরং সেটা নিতান্তই নগণ্য।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের শ্রীমতী নন্দিনী ভৌমিক একটি বিবাহের পৌরহিত্য সম্পন্ন করেছেন এমন একটি নিউজ ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। বিবাহ প্রক্রিয়াটির বিশেষত্ব ছিলো এই বিবাহে কোনো 'কন্যাদান' হয়নি বরং বেদমন্ত্র উচ্চারণ ও রবীন্দ্র সঙ্গীতের আবহের মাধ্যমে এই বিবাহ সম্পাদন করেছেন শ্রীমতী নন্দিনী ভৌমিক। বিয়েতে কন্যাদান নিয়ে একটু আলোচনা ও পর্যালোচনা করতে চাই।
কন্যাদান নিয়ে দুইটি যুক্তি উত্থাপন করা হচ্ছে-
১। কন্যা কোনো পণ্য নয়, তাই কন্যাদান অযৌক্তিক। ২। কন্যাদান বেদে নেই, তাই কন্যাদান অশাস্ত্রীয়।
এখন আমি-আপনি-আমরা বিবাহ প্রক্রিয়া হতে কন্যাদানকে বাদ দিয়ে সংস্কারবাদী হবো কিংবা হতে চাই।
এবার চলুন তবে কিছু শব্দেরও সংস্কার করি এবং সেগুলোও বাদ দেই।
বিয়ে করে আমরা যে কন্যাকে নিয়ে আসি তাকে বলা হয় 'স্ত্রী'। এখন স্ত্রী বলতে কিন্তু কেবল স্ব-পত্নী নয় বরং সকল স্ত্রীজাতিকে তথা নারীজাতিকেও বুজায়। আবার স্ত্রী মানে হল গৃহিনী, সচিব, সখী, মিতা, প্রিয় শিষ্যা, ললিত কলা বিধৌ। ‘স্ত্রী’র এই সংজ্ঞা টি কিন্তু আমাদের শাস্ত্রের বচন নয় বরং কালিদাসের প্রণীত একটি পদ।
তাহলে সংস্কার করতে গিয়ে এই শব্দটিও বাদ দিতে হবে নাকি শব্দের তাৎপর্য বুঝতে হবে?
'পতি' শব্দের অর্থ কর্তা তথা প্রভু এবং পত্নী হলেন পতির সহায়ক। তাহলে কি এই দুইটি শব্দও বাদ যাবে নাকি শব্দের তাৎপর্য বুঝতে হবে?
‘বিবাহ’ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে বি-পূর্বক বহ্ ধাতু ঘঞ্ প্রত্যয়। বি উপসর্গের অর্থ বিশেষ আর বহ্ ধাতুর অর্থ বহন করা। অন্যদিকে বধূ শব্দটির অর্থ যাকে বহন করে আনা হয়েছে। মানে দাঁড়াচ্ছে একজন পুরুষের বিবাহ করা মানে একজন নারী কে বিশেষ রূপে বহন করার দায়বদ্ধতা স্বীকার করা। এই সময়ের একজন তথাকথিত আধুনিক সমাজ ত বিবাহের এই সংজ্ঞাতেও প্রবলভাবে আপত্তি জানাবেন। কারণ আজকের নারী কোনো বিশেষ পুরুষ দ্বারা বাহিত হবেন?
অথর্ববেদ ৭/৩৬/১ মন্ত্র হতে অনুপ্রাণিত হয়ে দ্বৈত সত্ত্বার অদ্বৈত কাব্য ভাবনা থেকে পাওয়া যায়-
আমার হৃদয়ে বাঁধিলাম তোমায়,
তোমার হৃদয়েতে ঠাঁই দাও মোরে।
আমার মনো মাঝে তোমার বসত,
জায়গা যেন পাই আমি তোমার মন মাঝারে।।
ঐ মধুমাখা মিষ্টি দু'চোখে অপলক থাকি যেন আমি।
অনুভূতির অনন্ত সাগরে মিশে যাব আমি ও তুমি।।
-স্টিমন অনিক
অর্থাৎ নারী ও পুরুষ ত বিবাহের পর একে অপরের হবে তাই বিবাহ তথা পুরুষ কর্তৃক নারীকে বিশেষভাবে বহন বিষয়টাও ত অযৌক্তিক হয়ে দাঁড়ায়।
একটি জাতি হিসেবে আমাদের সংস্কৃতি ও পরম্পরার প্রতি আনুগত্য থাকাটা অবশ্যই প্রয়োজন কারণ আমাদের সংস্কৃতি ও পরম্পরাই আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্যের স্বাক্ষ্য দেয়। সংস্কৃতি ও পরম্পরাকে অস্বীকার করে সমাজে বাস করাটা সভ্যতার পরিচয় নয়। কিন্তু এই সময়ের নিরিখে একটি প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও একটি পুরুষ যখন একটা নতুন জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছে সে সময় তারা কতটা ধর্মের প্রতি, কতটা নিজ ঐতিহ্যের প্রতি, কতটা নিজ সংস্কৃতির প্রতি নিবেদিত প্রাণ থাকবে আর কতটা তার সময়ের বাস্তবতার প্রতি সৎ থাকবে সেগুলোও কিন্তু ভাবনার বিষয়।
আমাদের বিবাহ অনুষ্ঠানের একটি অন্যতম প্রথা হল সম্প্রদান। ‘সম্প্রদান’ শব্দটির অর্থ হল স্বত্বত্যাগপূর্বক সৎপাত্রে দান করা।
বিবাহে ‘সম্প্রদান'-এর মন্ত্র হল—
‘তুয়ভ্যমহং সম্প্রদদে’
অর্থাৎ তোমায় আমি আমার কন্যার দায়িত্ব সম্প্রদান করলাম।
এবার তাকে রক্ষণাবেক্ষণ ও পোষণ করার দায়িত্ব স্বামীর।
উপরে কয়েক জায়গায় বলেছি যে সনাতন সংস্কৃতি ও শাস্ত্রকে বিচার করতে হলে আগে শব্দের তাৎপর্য অনুধাবন করতে হবে।
আবার ফিরে আসি 'কন্যাদান' প্রসঙ্গে। আসুন "দান" শব্দটা একটু পরিস্কার হয়ে নেওয়া যাক।
প্রথমত, কন্যাদান হলো কন্যা সম্প্রদানের সংক্ষিপ্ত রূপ। কন্যাকে সম্প্রদান করেন কন্যার বাবা-মা, ভাই কিংবা কেউ না থাকলে মামা বা কাকা কিংবা মামাতো বা কাকাতো ভাই। এখন আমার প্রশ্ন হলো কন্যা কি বাবা-মায়ের ব্যক্তিগত সম্পত্তি বা ভাইয়ের ব্যক্তিগত সম্পত্তি যে কন্যা সম্প্রদান করলে সে পণ্য বলে গণ্য হবে? কন্যা কি কোনো বস্তু? নিশ্চয়ই নয়! তাহলে কন্যা সম্প্রদানকে কোন যুক্তিতে পণ্য বিক্রির সাথে তুলনা করা হচ্ছে?
পণ্য কাকে বলা হয়? যা বিক্রি করে অর্থ নেওয়া হয় তা-ই পণ্য।
যদি কন্যাকে পণ্য হিসেবে বিক্রি করা হতো তবে কন্যা বিক্রির সময় কন্যা বিক্রেতা পিতা বরপক্ষের কাছ থেকে অর্থ নিতো নিশ্চয়ই? কিন্তু বেদে তো উল্টোটা দেখা যায়! কন্যাকে জ্ঞান-বিদ্যা (শিক্ষিত করে) ও ধনাদি আভূষণ উপহার দিয়ে স্বামীগৃহের দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছে! যদিও এই উপহার আজ যৌতুকের নাম নিয়েছে। কন্যার বাবা-মা-ভাই-বোন কন্যাকে কী আর কতটুকু উপহার দেবে তা তাদের সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তে ইদানীং বরপক্ষরা হস্তক্ষেপ করে অনধিকার চর্চার অধর্ম করছেন। যাইহোক, কন্যার বাবা কন্যাকে বিক্রি (?) করে বিনিময়ে কিছু নিচ্ছেন না বরং দিচ্ছেনই! এটাকে কোনভাবেই কন্যাবিক্রয় বলা যায় না বরং বর কন্যার দায়িত্ব গ্রহণ করছে এবং অন্যদিকে কন্যাও স্বামীগৃহের দায়িত্ব গ্রহণ করছে।
সম্প্রদান আর বিক্রয়ে যে পার্থক্য আছে তা বোধহয় আমরা ভুলে গেছি। পণ্যের বিনিময়ে পণ্য নেওয়া হয়, কিন্তু কন্যা সম্প্রদান কিভাবে পণ্যবিক্রির পর্যায়ে চলে গেল সেটাই বোধগম্য নয়। পিতা তার কন্যার দেখভালের দায়িত্ব জামাতার উপর ন্যস্ত করেন -এটাই সম্প্রদান।
এই প্রক্রিয়ায় যদি কন্যা পণ্য হয় তবে পিতা যখন উপযুক্ত পুত্রের হাতে সংসারের যাবতীয় দায়দায়িত্ব অর্পন করেন তখন পুত্রও কি পণ্য হিসেবে বিবেচ্য হবে!
অতএব কন্যা সম্প্রদানে যে কন্যাকে পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয় না এটা কিন্তু স্পষ্ট, বাকিটা আমাদের বোঝার ভুল ছাড়া আর কিছুই না। এই ধরণের চিন্তাধারা সনাতন সংস্কৃতি থেকে উৎপন্ন হতে পারে না।
মনুসংহিতার (৯।৮৯) ভাবানুবাদে বলা হচ্ছে - "সৎপাত্রে কন্যা দাও, কন্যাকে আজীবন নিজের কাছে রাখো তবুও অসৎ পাত্রে কদাপি কন্যার দায়িত্ব দিও না।" এখানে 'সৎপাত্রে' সম্প্রদান কারক। অর্থাৎ সৎ পাত্রের সাথে কন্যার বিবাহ দাও। অসৎ পাত্রকে কন্যার ভার দিও না, অসৎ পাত্রে সম্প্রদান করো না।
"শিক্ষক ছাত্রদের জ্ঞানদান করছেন।" শিক্ষক কর্তা, জ্ঞানদান কর্ম, কিন্তু 'ছাত্রদের' হলো সম্প্রদান।
একইভাবে, পিতা সৎপাত্রে কন্যাদান করছেন। এখানে পিতা কর্তা, কন্যাদান কর্ম কিন্তু 'সৎপাত্রে' হলো সম্প্রদান!
যেই দেশে জ্ঞান পণ্য হয়ে যায়, জ্ঞান প্রদান কর্ম ব্যবসা হয়ে যায় সেই দেশেই কেবল এই কন্যা সম্প্রদান অযৌক্তিক মনে হয় আর সেই দেশেই কন্যারা পণ্য হয়ে যায়।
একজন রাজার কাছে তার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হচ্ছে তার রাজ্য তাই রাজা সবসময়ই চান একজন যোগ্য ব্যক্তির হাতে রাজ দায়িত্ব হস্তান্তর করতে একইভাবে একজন পিতার জন্য সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো তার কন্যা তাই পিতাও একজন সৎপাত্রে কন্যা সম্প্রদান করেন।
সংস্কৃতে 'কন্যা' শব্দটির উৎপত্তি কম্ ধাতু থেকে অর্থাৎ কামনা থেকে উৎপত্তি যার। তাই কন্যা হল পিতা মাতার শ্রেষ্ঠ কামনার ধন তথা কাম্য অভিজ্ঞান।
★ বরের হাতে কন্যার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে কন্যাকে কি ছোট করা হচ্ছে না?
বেদমন্ত্রে নারীকে বলা হয় জ্ঞানের ধারক এবং নারী যেহেতু শ্রীলক্ষ্মী তাই তিনি সম্পদেরও ধারক। তাই এখানে স্পষ্ট যে কন্যা স্বামীগৃহে গিয়ে প্রকৃতিপক্ষে স্বামীর গৃহকে ঐশ্বর্যে ভরিয়ে তুলেন।।
দ্বিতীয়ত, কন্যাদান বেদে নেই তাই কন্যা সম্প্রদানকে ’অশাস্ত্রীয়’ বলা হচ্ছে। আমাদের বিনীত জিজ্ঞাসা, রবীন্দ্রসঙ্গীত কি বেদে রয়েছে যে বিবাহে রবীন্দ্রসঙ্গীত ব্যবহার করা হচ্ছে? এখানে কিন্তু শ্রীমতী নন্দিনী ভৌমিক নিজের ইচ্ছেতেই বিয়েতে নতুন একটা আচার যুক্ত করলেন রবীন্দ্র সংগীতের আবহে বেদমন্ত্র উচ্চারণ করে বিবাহ সম্পন্ন করা। তাছাড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যা কিছু করছি সবই কি বেদকে অনুসরণ করে করছি! আর সনাতন শাস্ত্রের ভান্ডার ত অনন্ত তাই সনাতনের অন্য শাস্ত্রসমূহ, সংস্কৃতি ও পরম্পরা কি অমান্য?
সনাতন সংস্কৃতি বিবাহকে যেই উচ্চপর্যায়ে নিয়ে গেছে তাতে এই ব্যাপারে প্রশ্ন তোলার আগেও একটু ভাবা উচিৎ। বেদে ’পাণিগ্রহণ’ রয়েছে এ ব্যাপারে নিশ্চয়ই দ্বিমত হবেন না কেউ। পাত্র যখন কন্যার হাত ধরে তার আগে কন্যার পিতার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। পিতার অনুমতি না নিয়ে কন্যার পাণিগ্রহণ করা বা হাত ধরা সনাতন সংস্কৃতির অঙ্গ নয়৷ তাই পাণিগ্রহণের আগে পাত্র হবু স্ত্রী’র পিতার কাছে অনুমতি নেয়।
পিতা শুধুমাত্র মৌখিক অনুমতি দেবেন এটাও সনাতন সংস্কৃতি নয়। পিতা নিজ হাতে যোগ্য পাত্র বিবেচনায় নিজের জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ কন্যার পবিত্র হাত বরের হাতে তুলে দেন। প্রকৃতপক্ষে এটাকেই ’সম্প্রদান’ বলা হচ্ছে। গুরুর কাছে গিয়ে বিদ্যার্থীরা যখন জ্ঞান চায়, তখন গুরু তাদের যোগ্যতা পরীক্ষা করে তাদেরকে জ্ঞান সম্প্রদান করেন। তেমনি কন্যার পিতার কাছে পাত্র যখন কন্যার পাণিগ্রহণ করতে চায়, তখন কন্যার পিতা পাত্রের যোগ্যতা পরীক্ষা করে উপযুক্ত মনে হলে কন্যাকে সম্প্রদান করেন। পিতা যখন হবু জামাতাকে অনুমতি দেন তখন স্বাভাবিকভাবেই পিতা কন্যার বিরহে কাঁদেন, এর অর্থ এই নয় যে পিতা তার কন্যাকে ত্যাগ করে কাঁদছেন।
[ অথর্ববেদের বিবাহসুক্তের (১৪।১) যেখানে পাণিগ্রহণের কথা বলা হয়েছে তার ঠিক আগেই কন্যার পিতা ও মাতাভ্রাতাদের এই কাঁদার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ]
কন্যা সম্প্রদানকে অস্বীকার করা মানে পিতার অনুমতির অপেক্ষা না করেই কন্যার হাত ধরা তথা পাণিগ্রহণ করা। এই ধরণের পাণিগ্রহণ আর অপহরণের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই। কন্যার পিতার অনুমতি ছাড়াই যদি কন্যাকে বিয়ে করা যায়, তবে বিবাহে কন্যার পিতার আবশ্যকতাও থাকে না। কন্যার পিতার কাছে কন্যার দেখভালের দায়িত্ব গ্রহণ করা এবং যোগ্য বরের হাতে কন্যার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়াই সম্প্রদানের মূল তাৎপর্য।
ভগবান শ্রীরামচন্দ্রও ‘হরধনু’ ভেঙে নিজ যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে জনক রাজার অনুমতিক্রমে মাতা সীতাকে বিবাহ করেছিলেন।
এখন কন্যা সম্প্রদানকে অযৌক্তিক, অশাস্ত্রীয় বলে ত্যাগ করলে কনের পিতার নিকট পাত্রের অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন হয় না। ফলে কন্যার পিতা পাত্রের যোগ্যতার পরীক্ষাও করতে পারেন না। এরকম পরিস্থিতিতে যেকোনো পাত্রই যেকোনো কন্যাকে বিয়ে করতে পারে কোনরকম যোগ্যতার পরীক্ষা না দিয়েই! তাই কন্যাসম্প্রদান অস্বীকার করা মানে যেচে পড়ে কন্যার দায়িত্ব অযোগ্য পাত্রের হাতে চলে যেতে দেওয়ার দ্বার খুলে দেওয়া এবং কন্যার ভবিষ্যৎ সংকটাপন্ন করে তোলা। এই সংস্কৃতি আর যাই হোক, অন্তত সনাতন সংস্কৃতি নয়৷
এছাড়া সনাতনে কনের জন্য নিজ পাত্রকে ’স্বয়ংবর’ সভার আয়োজন করে যোগ্যতম পুরুষদের মধ্যে নিজে পছন্দ করে নেওয়ার প্রথাও ছিল তবে সেটাও পিতার উপস্থিতে সকল ধর্মীয় রীতি মেনে। এছাড়াও শাস্ত্রে পরস্থিতি বিবেচনায়, সংস্কৃতি বিবেচনায় বিভিন্ন ধরণের বিবাহ পদ্ধতি প্রচলিত আছে। সনাতন শাস্ত্র, দর্শন ও সংস্কৃতি কখনও মানবের অধিকার এবং চিন্তার অধিকার হরণ করে কোনকিছু চাপিয়ে দেয় না। আমাদের পরম্পরাগত ইতিহাস ও সংস্কৃতির পেছনেও গভীর তাৎপর্য লুকিয়ে আছে তাই কোনরূপ যাচাই-বাছাই না করে সেগুলো ত্যাগ করতে চাওয়া কেবল কোন ব্যক্তির নিজস্ব অভিরুচি হতে পারে, সেটা কোনভাবেই বৃহত্তর সনাতন সমাজের উপর চাপিয়ে দেওয়া উচিত নহে।
© স্টিমন অনিক
বিশেষ সহযোগিতায়ঃ শ্রী অর্পন কৃষ্ণ গোস্বামী।
9 মন্তব্যসমূহ
যুক্তিযুক্ত ও সাবলীল ভাষায় উত্তম ব্যাখ্যা ।জয় হোক সনাতনের। ওঁ শান্তি।।
উত্তরমুছুনধন্যবাদ দাদা, সময়োপোযোগী যুক্তিসংগত প্রবন্ধের জন্য। আপনার এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক
উত্তরমুছুনসম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত। অনেক কিছু জানতে পারলাম,খুবি ভালো লেগেছে পড়ে। সবাই এভাবে সনাতন সংস্কৃতি টা কে জানলে আমরা আরও তাড়াতাড়ি এগিয়ে যেতে পারবো।
উত্তরমুছুনস্বাগত
উত্তরমুছুনখুবই যুক্তি পূর্ণ
উত্তরমুছুনকন্যার পিতার অনুমতি নিয়ে কন্যার হাত ধরতে হয়, বুঝলাম। তাহলে বরের পিতার অনুমতি নিয়ে বরেরও হাত ধরা উচিত ছিলনা? কারণ বরও তো তার পিতা মাতার কাছে রাজ্যের মত।
উত্তরমুছুনআরো একটা প্রশ্ন মনে আসলো। সেটা হলো, কনে তার স্বামীগৃহের দায়িত্ব নেয়, তাহলে কনের মা বাবা যে গৃহে থাকেন মানে কনেগৃহের দায়িত্ব কে নিবে?
উত্তরমুছুনএখনকার দিনের মেয়েরা তো স্বাবলম্বী। তাহলে মেয়েদের দায়িত্ব নিতে হচ্ছে কেন এভাবে?
উত্তরমুছুনআবর্জনা
উত্তরমুছুন