অনুগীতা প্রসঙ্গে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্ব

 



ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কি পরমেশ্বর নাকি একজন মহান যোগী পুরুষ? অর্থাৎ তিনি কি ঈশ্বরের অবতার নাকি একজন মহাপুরুষ মাত্র? এই প্রশ্নের অবতারণা সাম্প্রতিক সময়ে অত্যাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই মহাভারতের যুগে একমাত্র শিশুপাল ছাড়া বেদজ্ঞ পণ্ডিতমহলসহ সকলেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর হিসেবেই প্রত্যক্ষ করেছিলেন। তারপর থেকে অদ্যাবধি সনাতনী মাত্রই বিশ্বাস করেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং পরমেশ্বরের অবতার এবং আমাদের শাস্ত্র সমূহও সেই সাক্ষ্যই দেয়। এমনকি আজ থেকে ২৩০০ বছর পূর্বে খ্রীস্টপূর্ব ৩২৬ সালের মে মাসে জিলোম নদীর তীরে যেটা গ্রীক ইতিহাসে বিখ্যাত হিডেসপিসের যুদ্ধ (Battle of Hydaspes) নামে পরিচিত সেখানেও দেখা যায় পৌরব রাজ্যের রাজা পুরুর সৈন্যরা তাদের ইষ্ট শ্রীকৃষ্ণের ফেস্টুন (ছবি সম্বলিত) হাতে যুদ্ধ করেছিলেন। এই বিষয়ে আমরা পরবর্তীতে আলোচনা করবো কারণ ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে ঈশ্বর প্রমাণে পারাশর পুত্র মহামুনি ব্যাসদেবের মহাগ্রন্থ মহাভারতই যথেষ্ট এবং সেটা যদি মহাভারতের অনুগীতা অংশকে দিয়েও বিচার করি তবুও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্ব খর্ব হয় না বরং সেখান থেকেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্ব প্রতিপন্ন হয়।

মহাভারতের যুগ থেকে অদ্যাবধি শিশুপাল তার উত্তরসূরীরা ব্যতীত সকল সনাতনী মাত্রই বিশ্বাস করেছে এবং সকল আচার্যগণও সাক্ষ্য দিয়েছেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং পরমেশ্বর। কিন্তু হঠাৎ করে ১৫০ বছর আগে জন্ম নেওয়া এক বিশেষ সমাজ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু করে এবং শাস্ত্রীয় নানান কুযুক্তিতে তা সিদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়। সবশেষে তারা অস্ত্র হিসেবে বেছে নেয় মহাভারতের আশ্বমেধিক পর্বের অনুগীতা অংশের একটি শ্লোকের (১৭/১৩) একটিমাত্র শব্দ "যোগযুক্ত" এই একটিমাত্র শব্দ দিয়ে তারা প্রমাণ করতে চায় যে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ঈশ্বর নন বরং তিনি ঈশ্বরের সাথে যোগযুক্ত হয়ে গীতামৃত দান করেছিলেন। আমরা তাই মহাভারতের আশ্বমেধিক পর্বের অনুগীতা প্রসঙ্গেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্ব প্রমাণ করবো। তাছাড়া মহাভারতের শত শত শ্লোকে বিভিন্ন ঘটনায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্ব সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত।

🔹 অনুগীতা প্রসঙ্গঃ এই বিশেষ সমাজ (অনার্য) কিন্তু বঙ্কিমচন্দ্রের "কৃষ্ণচরিত্র" কে প্রামাণিক গ্রন্থ মানে এবং শ্রীরাধার অস্তিত্ব নেই প্রমাণে এই গ্রন্থকেই ব্যবহার করে। এখন সে বঙ্কিমচন্দ্রই যে তাঁর কৃষ্ণচরিত্র গ্রন্থে অনুগীতাকে প্রক্ষিপ্ত প্রমাণ করেছেন সেটা তারা মানেন না কেন? তাদের প্রামাণ্য বঙ্কিমচন্দ্র প্রমাণ শেষে বলেন, "অনুগীতা যে প্রক্ষিপ্ত বা শ্রীকৃষ্ণবিরোধীদের রচিত তার বড় প্রমান হলো পর্বসংগ্রহাধ্যায়ে ইহার কিছু মাত্র প্রসংগ নেই।"

[রেফারেন্স-কৃষ্ণচরিত্র; ষষ্ঠ খণ্ড; দ্বাদশ পরিচ্ছেদ; কৃষ্ণ প্রয়ান (বংকিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)]

এই যে এরা একই বইয়ের একটা মানে অন্যটা মানে না একে বলা হয় Choose and Pick Fallacy. অর্থাৎ নিজেদের সুবিধামতো একটা মানবে অন্যটা মানবে না। যাইহোক আমরা প্রক্ষিপ্তবাদে বিশ্বাসী না এবং নিজেদের সুবিধামতো প্রক্ষিপ্তপাঠ দেখিয়ে শাস্ত্রকে কাটছাঁটও করি না। তাই এক্ষণে অনুগীতা থেকেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্ব প্রমাণ করছি। একটু মনযোগ সহকারে পড়বেন কারণ আমরা শ্লোক ধরে ধরে বিশ্লেষণ করবো, মাঝখান থেকে একটা শ্লোকের একটিমাত্র শব্দ ধরে শাস্ত্রব্যাখ্যা করবো না।

🔹 যোগযুক্ত শব্দের সমাধানঃ কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধকালে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের নিকট যে গীতামৃত দান করেছিলেন, সেই পবিত্র গীতাজ্ঞান অর্জুন ভুলে গিয়ে আশ্বমেধিক পর্বে শ্রীকৃষ্ণের নিকট পুণরায় শুনতে চান। তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন,

"পরম হি ব্রহ্ম কথিতং যোগযুক্তেন তন্ময়া।

ইতিহাসস্তু বক্ষ্যামি তস্মিন্নর্থে পুরাতনম্ ৷৷"

অর্থাৎ, তৎকালে আমি যোগযুক্ত হইয়া পরব্রহ্মের বিষয় বলিয়াছিলাম, এখন সেই বিষয়ে প্রাচীন বৃত্তান্ত বলিতেছি। (মহাভারত, আশ্বমেধিক পর্বঃ ১৭/১৩, অনুগীতা)

তাদের আপত্তি এই "যোগযুক্ত" শব্দতে। এখানে লক্ষ্যণীয় যে, "যোগ" শব্দের নানা প্রকার অর্থ আছে এখানে কোন অর্থে "যোগ" শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে তা স্পষ্ট বুঝতে হবে। ভারতকৌমুদী টীকায় বলা হয়েছে,

 "যোগযুক্তেন ঐক্যাগ্রসমন্বিতেন"

অর্থাৎ, এখানে যোগযুক্ত অর্থ 'একাগ্রতার সহিত'

প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে তিনি অর্জুনকে গীতাজ্ঞান পুনরায় প্রদান করেন নি কেন? যোগযুক্ত কথোপকথনে তিনিই ঈশ্বর এটা কিভাবে প্রমাণ হয় এবং কেনইবা যোগযুক্ত অর্থ "একাগ্রতার সহিত" ধরতে হবে?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তরও পর্যায়ক্রমে দিচ্ছি।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পুনরায় গীতাজ্ঞান দিয়েছেন ত। তাই আশ্বমেধিক পর্বের একই শ্লোকে (১৭/১৩) ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন,“আমি সেই বিষয়ে তোমাকে প্রাচীন বৃত্তান্ত বলিতেছি অর্থাৎ সেই গীতাজ্ঞানই তিনি প্রকারন্তরে ইতিহাস গল্পের মাধ্যমে বলবেন কেননা গল্পের মাধ্যমে যদি খুব কঠিন বিষয়ও আলোচনা করা হয়, তবে সেটা খুব সহজেই মনে রাখতে পারা যায়। এই জন্যই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সেই উপায়টি অবলম্বন করেন। পরবর্তীতে গীতাজ্ঞান এইরুপে ভিন্নভাবে কথিত হওয়ায় একেঅনুগীতাবলা হয়। অনুগীতাই যে প্রকারান্তরে শ্রীমদভগবদগীতার জ্ঞান তার প্রমাণ হলো, অনুগীতা প্রদানের পর ভগবান বলিলেনঃ

"পূর্বমপ্যেতদেবোক্তং যুদ্ধকাল উপস্থিতে।

ময়া তব মহাবাহো তস্মাদত্র মনঃ কুরু।।"

(অশ্বমেধিকপর্বঃ ৬৬/)

অনুবাদঃ মহাবাহু! পূর্বেই কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধের সময় উপস্থিত হইলে, আমি তোমার নিকট ভগবদগীতাস্বরূপ এই বিষয়ই বলিয়াছিলাম, অতএব তুমি এই বিষয়ে মনোনিবেশ কর।

অতএব এইটা সুস্পষ্ট যে ভগবান যদিও সরাসরি ভাবে অর্জুনকে পুনরায় গীতা জ্ঞান প্রদান করতে অসম্মতি জানান তবুও ইতিহাসের মাধ্যমে ভগবান এখানে গীতার বিষয়ই তুলে ধরেছেন, যাতে করে অর্জুন সেই জ্ঞানটা আয়ত্ত করতে পারেন। অর্থাৎ, পূর্বে শ্রীকৃষ্ণ কেবল অর্জুনকে নয় বরং কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধকে নিমিত্ত করে সমগ্র সংসারকেই গীতাগ্রন্থ দান করেছিলেন। তাই একই জ্ঞান একইভাবে আলাদা করে অর্জুনকে দ্বিতীয়বার প্রদান করার কোন উপযোগিতা নেই।

আশ্বমেধিক পর্বের এই কথোপকথনেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্ব প্রমাণ হয়। কারণ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলছেন,

"পাণ্ডুনন্দন! নিশ্চয়ই তুমি আমার সেই সকল বাক্যে বিশ্বাস কর নাই, অথবা তুমি নিশ্চই দুর্ম্মেধা (১৭/১১) তুমি যে বৈমত্যবশতঃ সেসকল মনে রাখিত পার নাই, তাহা আমার গুরুতর অপ্রিয় হইয়াছে (১৭/১০)

এখানে স্পষ্টত ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলছেন, "তুমি আমার বাক্যে বিশ্বাস করো নাই" অর্থাৎ গীতার শ্লোকগুলা ভগবান শ্রীকৃষ্ণেরই বানী৷ তাছাড়া অর্জুন যে ভুলে গিয়েছেন সেটাও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পছন্দ হয় নি।

পরমেশ্বরের সাথে যোগযুক্ত হওয়ার বিষয়টা আসলে কি সেটা এবার পরিস্কার করে দিচ্ছি শ্রীমদভগবদগীতা থেকেই।

গীতার /৪৭ নং শ্লোকে পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,

"যিনি শ্রদ্ধাযুক্ত হইয়া মদগতচিত্তে আমার ভজনা

করেন, যোগীদের মধ্যে তিনিই আমার সহিত যোগে সর্বাপক্ষো অধিক যুক্ত।"

এরপর গীতার / নং শ্লোকে বলেছেন,

"হে অর্জুন, তুমি আমাতে নিবিষ্টচিত্ত একমাত্র

আমার শরণাপন্ন হইয়া যোগযুক্ত হইলে যেভাবে আমার সমগ্র স্বরূপ জানিতে পারিবে, তাহা বলিতেছি শোনো।"

গীতার /১৪নং শ্লোকে ভগবান বলছেন,

"হে অর্জুন, যে যোগী অনন্যমনা হইয়া চিরদিন

নিরন্তর আমাকে স্মরণ করেন (যুক্ত থাকেন), সেই সমাহিত

যোগীর পক্ষে আমি সুলভ জানিবে।"

অর্থাৎ একজন কিভাবে পরমেশ্বরের সাথে তথা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সাথে যোগযুক্ত হবেন তা তিনি শ্রীমদভগবদগীতায়ই স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজে ঈশ্বরের সাথে যোগযুক্ত হয়েছেন এটা সম্পূর্ণ অবান্তর দাবী।

এরা যে দাবী করে গীতার কিছু শ্লোক যোগযুক্ত আর বাকিগুলো যোগমুক্ত!! এই দাবিটা choose and pick fallacy হয়ে গেলো। আশ্বমেধিক পর্বে কি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যে তিনি কিছু শ্লোক যোগযুক্ত এবং কিছু শ্লোক যোগমুক্ত হয়ে বলেছেন? তাহলে আশ্বমেধিক পর্বের ১৭/১৩ শ্লোকের "যোগযুক্ত" শব্দকে ধরে এগুলে তাদের উত্থাপিত যোগ-বিয়োগ তত্ত্বের কোন প্রাসঙ্গিকতা থাকে না।

🔹 অনুগীতা অংশেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্বঃ

তবুও যদি অনুগীতা প্রসঙ্গে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্ব নিয়ে প্রশ্ন থাকে তবে এই পর্বেরই একটি শ্লোক দিয়ে তার সমাধান দিচ্ছি। (আশ্বমেধিক পর্ব : ১৭/) অর্জুন ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে বলছেন,

"বিদিতং মে মহাবাহো! সংগ্রামে সমুপস্থিততে।

মাহাত্ম্যং দেবকীপুত্র! তচ্চ তে রূপমৈশ্বরম্।।"

অর্থাৎ, মহাবাহু দেবকীপুত্র! যুদ্ধ উপস্থিত হইলে আপনার মাহাত্ম্য আমি জানিয়াছি। তদানীন্তন আপনার সেইরূপ- ঈশ্বরেরই রূপ।

এখানে স্পষ্টভাবেই শ্রীকৃষ্ণ যে স্বয়ং ঈশ্বর তার সাক্ষ্য অর্জুন দিচ্ছেন। সুতরাং এখানে শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্ব প্রমাণিত হলো। এছাড়াও অর্জুনের এরূপ সাক্ষ্য শ্রীমদভগবদগীতায়ও রয়েছে। একাদশ অধ্যায়ের ৩৯-৪৬ শ্লোকসমুহে অর্জুনের বক্তব্য শুনলেই স্পষ্ট হয়ে যায় শ্রীকৃষ্ণই পরমেশ্বর ছিলেন।।

গীতার ১১/৪১-৪২ শ্লোকদ্বয়ে অর্জুন বলেন,

"পূর্বে আমি তোমার মহিমা না জেনে তোমাকে 'হে কৃষ্ণ', 'হে যাদব', 'হে সখা' বলে সম্বোধন করেছি। প্রমোদবশত এবং প্রণয়বশত যা কিছু করেছি তা তুমি দয়া করে ক্ষমা কর।"

"বিহার, শয়ন, ভোজনের সময়, কখনো একাকী, কখনো অন্যদের সমক্ষে, আমি যে অসম্মান করেছি, সে সমস্ত অপরাধ দয়া করে ক্ষমা কর।"

পরবর্তী দুই শ্লোকে (১১/৪৩-৪৪) অর্জুন বলেন,

"হে অমিতপ্রভাব, তুমি এই চরাচর জগতের পিতা, পূজ্যগুরু এবং গুরুর গুরু। অতএব, ত্রিভূবনে তোমার মত আর কেউ নাই। তোমার থেকে শ্রেষ্ঠ অন্য কে হতে পারে?"

"হে পরম পূজ্য ভগবান! আমি তোমাকে প্রণাম করে তোমার কৃপা ভিক্ষা করছি। পিতা যেমন পুত্রের, সখা যেমন সখার, প্রিয় যেমন প্রিয়ার অপরাধ ক্ষমা করে, তুমিও সেই ভাবে আমার অপরাধ ক্ষমা কর।"

তবুও যদি সংশয় থাকে তবে আশ্বমেধিক পর্ব থেকে আরও প্রমাণ দিচ্ছি।

🔹 আশ্বমেধিক পর্বে শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্বঃ

অনুগীতা বলা শেষ করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং অর্জুন রথে করে হস্তিনাপুর যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে অর্জুন শীকৃষ্ণকে কি কি সম্বোধন করেছিলেন সে বিষয়টি তুলে ধরছি এখন। এই অংশটিকে অনুগীতায় "অর্জুনের জ্ঞানোদয়" নাম দেওয়া হয়েছে।

হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ অনূদিত মহাভারতের আশ্বমেধিক পর্বের ৬৭তম অধ্যায়ের নং শ্লোকে অর্জুন বলছেন,

"হে প্রভু মধুসূদন! অগ্নি সর্বদাই আপনার তেজ হতে উৎপন্ন হয়। এই স্বর্গ মর্ত্য সবই আপনার মায়া।"

অর্থাৎ অনুগীতা শ্রবণ করে অর্জুনের যখন জ্ঞানোদয় হলো তখন তিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে সর্বকারণের কারণ বলেই অভিহিত করেছেন। তবুও সংশয় আছে কোন? ঠিক আছে অনার্য সমাজীরা মহাভারতের ক্রিটিকাল এডিশনকে প্রামাণিক মানে তাই না? তাহলে ওখান থেকেই দেখানো যাক।

"O Madhusudana! The Pandavas possess a protector on you. You were the boat that enable us to cross the Ocean of the Kurus. O creator of the universe! I bow down before you. O soul of the universe!  O origin of the universe! I know you only to the content that you allow my mind to know you. Everything in the universe, mobile and immobile established on you."

অর্জুন কি আর কিছু বলতে বাকি রেখেছেন! আচ্ছা! আরেকটা লাইন যোগ করি তাহলে। অর্জুন বলছেন,

"O Lotus eyed one! You are the Supreme Atma. I bow down before you."

কেবল অর্জুন নয় বরং মহাভারতের যুগে সকলেই যে জানতেন শ্রীকৃষ্ণই পরমেশ্বর সে সাক্ষ্যও দিচ্ছেন অর্জুন নিজে। অর্জুন বলছেন,

"O keshava! I know from Narada, Devala, Krishna Dvaipayana and Grandfather of kurus that everything is based on you."

[Mahabharata, CE, Section - 89, Ashvamedhik Parva, Chapter - 1886 (51) ]


এতকিছুর পরও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্ব অস্বীকার করার যে কয়টি উপায় অনার্য সমাজীদের হাতে অবশিষ্ট আছে সেগুলো হলোঃ 

/ অনুগীতার একটি শ্লোক (১৭/১৩) বাদে সম্পূর্ণ আশ্বমেধিক পর্বই প্রক্ষিপ্ত।

/ BORI প্রক্ষিপ্ত, তাদের বানানো মহাভারতের ক্রিটিকাল এডিশনও প্রক্ষিপ্ত।

/ আমরা কিছু মানি না, আমাদের সুবিধামতো মহাভারতের কিছু শ্লোক ব্যাতীত সম্পূর্ণ মহাভারতই প্রক্ষিপ্ত।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

  1. আপনার পরমেশ্বর মরলো কেনো? চুল এটা বাংলা শব্দ কিন্তু বডার ক্রসকরলে এটা বাঃ ল হয়ে জায় আর কিছু বললাম না 🤣🤫

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. পরমেশ্বর মরেন না। উনার কোনো এক অবতারের উদ্দেশ্য সম্পন্ন হয়ে গেলে তিনি সেই অবতারের দেহ ত্যাগ করে নিজের পরম ধামে ফিরে যান। অবশ্য চেয়ারে বসে থাকা এক কাল্পনিক আকারহীন বায়বীয় সত্ত্বার উপাসক এসব বুঝবেনা। আর যে চুল বালের কথা বলছেন...বিচিহীনকেও একটু স্টাইল করে বললে "নো বিচি" হয়ে যায়, আর কিছু বললাম না। :D

      মুছুন