ক্রিটিকাল এডিশন কি? মহাভারত, রামায়ন ও বেদ সংহিতার ক্রিটিকাল এডিশন সম্পর্কে ধারণা।।

ক্রিটিকাল এডিশন নিয়ে সোজাসাপ্টা আলোচনা।।

ক্রিটিকাল এডিশন নিয়ে নানারকম বিভ্রান্তিকর তথ্য তত্ত্বের সমন্বয়ে একদল অনার্য গোষ্ঠী ফেসবুকে অনেক সাধারণ সনাতনীদের মিসগাইড করছে গত প্রায় দুই বছর ধরে। ক্রিটিকাল এডিশনে তাদের মূল টার্গেট হলো রামায়ণ মহাভারত। রামায়ণ মহাভারতের বিভিন্ন প্রচলিত ঘটনা আধ্যাত্মিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তাদের প্রধান দুইটি অস্ত্র যথাঃ / প্রক্ষিপ্তবাদ / ক্রিটিকাল এডিশন তাই ক্রিটিকাল এডিশন নিয়ে সকলকে একটি স্পষ্ট ধারণা দেওয়া অত্যন্ত আবশ্যক।

ক্রিটিকাল এডিশন কি?

ক্রিটিকাল এডিশনঃ ক্রিটিকাল এডিশন হলো এক ধরনের  Textual Criticism অর্থাৎ কোন প্রাচীন গ্রন্থের বিভিন্ন সংস্করণের পাণ্ডুলিপি স্টাডি। একই বিষয়ের (টেক্সট) উপর বিভিন্ন সোর্স থেকে প্রাপ্ত প্রাচীন পাণ্ডুলিপির উপর  কিছু স্পেসিফিক মেথডলজি মেনে আপাতদৃষ্টিতে একটি প্রামাণ্য সংস্করণ প্রস্তুত করলে সেটাকে ক্রিটিকাল এডিশন বলা হয়। ক্রিটিকাল এডিশন যেসকল মেথডলজির উপর ভিত্তি করে করা হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত প্রাচীন পাণ্ডুলিপির মধ্যে যেসকল টেক্সটগুলো বেশিরভাগ সংস্করণে (Common Texts) পাওয়া যায় সেগুলোকেই ক্রিটিকাল এডিশনে স্থান  দেওয়া হয়।

কোন পাণ্ডুলিপির ক্ষেত্রে ক্রিটিকাল এডিশনকে কি একমাত্র শুদ্ধতম প্রাচীন পাঠ সংস্করণ বলা হয় বা এটাই কি সর্বশেষ প্রামাণিক দলিল?

না, বিষয়টা একদমই এমন কিছু নয়। যাদের ক্রিটিকাল এডিশন সম্পর্কে ন্যুনতম ধারণা নেই তারাই শুধুমাত্র এই ধরণের দাবী করতে পারে। কোন গবেষক, এমনকি ক্রিটিকাল এডিশনের কোন সম্পাদকও এমন দাবী করতে পারেন না এবং করেনও না। ক্রিটিকাল এডিশন মূলত কোন প্রাচীন পাণ্ডুলিপির প্রাতিষ্ঠানিক সংরক্ষণ (আর্কাইভ) পদ্ধতিমাত্র যাতে করে সে পাণ্ডুলিপির অথেন্টেটিসিটি নিয়ে বর্তমান ও ভবিষ্যতে প্রশ্ন না উঠে। ক্রিটিকাল এডিশন মূলত কোন ডেডিকেটেড সংস্থা বা একদল গবেষকের ফিজিক্যাল রিসার্চ মাত্র। এটাকেই একমাত্র বিশুদ্ধ সংস্করণ ভাবার কোন সুযোগ নেই এবং কোন গবেষকই এমনটা মানেনও না।

যেমন ধরুন সবচেয়ে বেশি আলোচিত রামায়ণ মহাভারতের দুটি ক্রিটিকাল এডিশন কিন্তু একই মেথডে করা হয় নি, এমনকি একই প্রতিষ্ঠান থেকেও করা হয় নি। এছাড়াও ঋগ্বেদ শ্রীমদভগবদগীতারও ক্রিটিকাল এডিশন করা হয়েছে যা আমরা লেখার শেষ অংশে আলোচনা করবো। 

ক্রিটিক্যাল এডিশন রামায়ণ এবং ক্রিটিক্যাল এডিশন মহাভারতের মধ্যে কি কোন তফাৎ আছে?

মহাভারতের ক্রিটিকাল এডিশন থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই রামায়ণের ক্রিটিকাল এডিশন প্রস্তুত করা হয়। মহাভারতের ক্রিটিকাল এডিশন প্রস্তুত করা হয় Bhandarkar Oriental ResearchInstitute (BORI) কর্তৃক যার প্রধান ছিলেন বিষ্ণু সীতারাম সুখতাঙ্কর। মহাভারতের ক্রিটিকাল এডিশনের কাজ শুরু হয় ১৯১৭ সালে যা প্রায় ৫০ বছর পর ১৯৬৬ সালে শেষ হয়। ১৯৬৬ সালের ২২শে সেপ্টেম্বরে BORI কর্তৃক সম্পাদিত ১৯ খণ্ডে মহাভারতের ক্রিটিকাল এডিশন তৎকালীন ভারতের রাষ্ট্রপতি . রাধাকৃষ্ণণের হাতে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এখানে গুরুত্বপূর্ণ যে ক্রিটিকাল এডিশন নিয়ে গবেষণার সিংহভাগ  সম্পন্ন হয়েছে ইংরেজ শাসনামলে (১৯১৭-১৯৪৭তাই এই গবেষণায় ব্রিটিশ প্রভাবকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। হরিবংশের ৬০৭৩ টি শ্লোক সহ মহাভারতের ক্রিটিক্যাল এডিশনের মোট শ্লোক সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৯,৮৫৭। তবে BORI এর ‍ওয়েবসাইটে মহাভারতের ক্রিটিক্যাল এডিশনের মোট শ্লোক সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৯,০০০+ দেখানো হয়।

মহাভারতের ক্ষেত্রে BORI কে প্রচুর প্রাচীন স্ক্রিপ্ট, অধিক সংখ্যায় (১২৫৯টি) পাণ্ডুলিপি এভিডেন্স এবং স্ক্রিপ্টগুলো কোন লিপিতে উপলব্ধ এমন অনেক বিষয় বিবেচনায় নিতে হয়েছিলো। নানান লিপির টেক্সটের মধ্যে এতো ফারাক ছিলো যে প্রত্যেকটি পাণ্ডুলিপিকে আলাদা করে গুরুত্ত্ব দিয়ে রিসেন্সন তার শাখা-প্রশাখা ভাগ করতে হয়েছে। যেহেতু আলাদা করে প্রত্যেকটি পাণ্ডুলিপি গুরুত্ত্ব পাচ্ছে, তাই সকল প্রাচীন পাণ্ডুলিপিগুলোর গুরুত্ত্ব থেকেই যায়। অর্থাৎ কোন পাণ্ডুলিপিকেই ঢালাওভাবে প্রক্ষিপ্ত বলার সুযোগ নেই,কারণ সকল পাণ্ডুলিপির সমন্বয়েই ক্রিটিক্যাল এডিশন।  

BORI কর্তৃক প্রকাশিত মহাভারতের ক্রিটিকাল এডিশন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৫১ সালে The Oriental Institute, Baroda বাল্মিকী রামায়ণের ক্রিটিকাল এডিশন প্রস্তুতের কাজ শুরু করে। ১৯৫৮ থেকে ১৯৭৫ সালের মধ্যে ক্রমান্বয়ে রামায়ণের সম্পূর্ণ ক্রিটিকাল এডিশন প্রকাশ করা হয়। এই কাজের জন্য এডিটরদের হাতে প্রায় ২,০০০ ম্যানুস্ক্রিপ্ট ছিল। তবে গ্রহণযোগ্যতার বিচারে শুধুমাত্র ৫০-১০০ টি ম্যানুস্ক্রিপ্ট নিয়েই প্রাকটিক্যালি কাজ করা হয়। বৃহত্তর পর্যায়ে স্ক্রিপ্ট গুলোর মধ্যে তেমন কোনও পার্থক্য পাওয়া যায়নি। ম্যানুস্ক্রিপ্ট  গুলোকে মূলত দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। সাউথ ভার্সন ও নর্থ ভার্সন। নর্থকে আবার দুই শ্রেনীতে রাখা হয়েছে; নর্থ – ইস্ট ও নর্থ – ওয়েস্ট। মূল বাল্মিকী রামায়ণে ২৪,০০০ শ্লোকের উপস্থিতি থাকলেও ক্রিটিক্যাল এডিশনের বাল্মিকী রামায়ণে মোট শ্লোক সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১৮,৬৭০টি।

এক্ষেত্রে রামায়ণ মহাভারতের ক্রিটিকাল এডিশনে যে তফাৎ দেখা যায় সেটা হলো যেসব স্থানে নর্থ সাউথের টেক্সট না মেলে তখন মহাভারতের ক্ষেত্রে এডিটর দেখেছে antiquity স্ক্রিপ্ট কিন্তু রামায়ণের ক্ষেত্রে সেখানে এডিটির নিজের বিচার, বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করেছেন এই শ্লোকগুলো থাকার কথা কিনা। ফলে রামায়ণের ক্রিটিকাল এডিশনে অনেক বেশি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। রামায়ণের ক্রিটিকাল এডিশনে মূলত বাল্মিকী মুনির লেখার প্যাটার্নকে গুরুত্ব দিয়ে মেথডলজি সাজানো হয়েছে।

ক্রিটিকাল এডিশন কি আধ্যাত্মিকতা বিবর্জিত?

অনেকে মনে করেন মহাভারত বা রামায়ণের ক্রিটিকাল এডিশনে আধ্যাত্মিকতাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আসলে বিষয়টা এমন নয়, ক্রিটিকাল এডিশন একদম প্রাচীন টেক্সটের আপাত অবিকৃত সংস্করণকে তুলে ধরার প্রয়াস মাত্র। এখানে আধ্যাত্মিকতা বাদ দেওয়া বা অলৌকিক ঘটনার দোহাই দিয়ে টেক্সটে পরিবর্তন আনার কোন চেষ্টা করা হয় না। রামায়ণ মহাভারতের ক্রিটিকাল এডিশনে এমন অসংখ্য শ্লোক পাওয়া যায় যেখানে আধ্যাত্মিকতা অলৌকিকতা সিদ্ধ হয়।

রামায়ণ মহাভারতের ঘটনা পর্যালোচনার ক্ষেত্রে ক্রিটিকাল এডিশনই কি একমাত্র মান্য ও প্রামাণিক গ্রন্থ?

না, একদম তা নয়। ব্যাপারটা নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তির শিকার হয়ে থাকে। মহাভারত ও রামায়ণ আমাদের ইতিহাস। এই ইতিহাস অবলম্বনে বাল্মিকী ও কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস দুইটি মহাগ্রন্থ রচনা করেছেন। ক্রিটিক্যাল এডিশনের মাধ্যমে উনাদের রচিত গ্রন্থে যুক্ত হওয়া আপাত প্রক্ষিপ্ততা বর্জনের প্রয়াস করা হয়েছে মাত্র। তবে এই ইতিহাস শুধু যে মাত্র দুটি গ্রন্থেই উল্লেখ করা হয়েছে, তা নয়। আমাদের যদি কোন ঘটনা প্রবাহ নিয়ে সংশয় উৎপন্ন হয় তবে অপরাপর অন্যান্য সহায়ক শাস্ত্রও রয়েছে। রামায়ণ ও মহাভারতের ঘটনার উল্লেখ অনেক পুরাণেও পাওয়া যায় একাধিক বার। ইতিহাস বিচারের ক্ষেত্রে সব গ্রন্থের সমন্বয়েই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। উদাহরনস্বরূপ, অযোধ্যার রাম মন্দিরের আইনি লড়াইয়ে হিন্দুপক্ষ ক্রিটিকাল এডিশন নয় বরং বাল্মিকী রামায়ণকেই আশ্রয় করেছিলেন। কিন্তু শুধু বাল্মিকী রামায়ণ দিয়েও বিচারের রায় হিন্দু পক্ষে আসছিলো না তখন সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে মহান রামভক্ত তুলসীদাসজ্বীর রামচরিতমানস ও স্কন্ধপুরাণকেও সামনে আনতে হয়েছিলো এবং স্কন্ধ পুরাণ থেকেই সবচেয়ে বেশি রেফারেন্স নেওয়া হয়েছিল।

রামায়ণের ক্রিটিকাল এডিশনে কি উত্তর কাণ্ডকে প্রক্ষিপ্ত ধরা হয়েছে?

উত্তরকাণ্ডের প্রক্ষিপ্ততার কোন প্রামাণিক দলিল নেই। এটা তো উত্তর কাণ্ডের স্ট্রাকচার দেখে বেশিরভাগ স্কলারের একটি থিওরিমাত্র যে উত্তর কাণ্ড পরে সংযোজন হয়ে থাকতে পারে। সেটা আদৌ পরে লেখা হয়েছে কিনা, তার তো কোন প্রাক্টিক্যাল প্রুফ নেই। কিছু ধারণা বা "হতে পারে" শব্দের উপর ভিত্তি করে সম্পূর্ণ একটা কাণ্ডকে উধাও করে দেওয়া যায় না এবং ক্রিটিকাল এডিশনেও দেওয়া হয় নি। রামায়নের উত্তর কাণ্ডকে ঢালাওভাবে বাদ দিলে রামরাজ্যের অস্ত্বিত্তও থাকে না। 

ক্রিটিক্যাল এডিশন গবেষণা করে আপাতদৃষ্টিতে কিছু প্রক্ষিপ্ত শ্লোক বাদ দিয়েছে এবং সেটা কেবল উত্তরকাণ্ড থেকে নয় বরং অন্যান্য কাণ্ড থেকেও। তবে ক্রিটিকাল এডিশনে যুদ্ধ কাণ্ড উত্তর কাণ্ড থেকে সবচেয়ে বেশি শ্লোক বাদ দিয়েছে তারা। রামায়ণের উত্তরকাণ্ড যে প্রক্ষিপ্ত নয় এটা নিয়ে আমাদের আলাদা লেখা আসবে।

বেদ সংহিতার কি ক্রিটিকাল এডিশন হয়েছে

হ্যা, বেদ সংহিতারও ক্রিটিকাল এডিশন করা হয়েছে। বেদ সংহিতার চারটির মধ্যে ঐতিহাসিকতার বিচারে সবচেয়ে প্রাচীন হচ্ছে ঋগ্বেদ সংহিতা যার ক্রিটিকাল এডিশন প্রস্তুত করা হয়েছে। ঋগ্বেদকে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন Literary Document হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

ভারতের পুনে অবস্থিত বৈদিক গবেষণার একটি প্রধান প্রতিষ্ঠান "বৈদিক সংশোধন মণ্ডল" কর্তৃক ঋগ্বেদ সংহিতার ক্রিটিকাল এডিশন প্রকাশ করা হয়। এর নামকরণ করা হয় "ঋগ্বেদ সংহিতা, ঋগ্বেদসংহিতা পদপাঠ ঋগ্বেদভাষ্য" পুনেতে অবস্থিত Bhandarkar Oriental Research Institute (BORI) কর্তৃক সংগ্রহীত ২৮,০০০ পাণ্ডুলিপি থেকে ৩০ টি পাণ্ডুলিপি বেদের সবচেয়ে প্রাচীন ভাষ্যকার সায়ণাচার্যকৃত সায়ণভাষ্য পর্যালোচনা করে এই ক্রিটিকাল এডিশন প্রস্তুত করা হয়। ঋগ্বেদ সংহিতার ২৮,০০০ প্রাচীন পাণ্ডুলিপির মধ্যে ,৬৮১ টি পাণ্ডুলিপিই সংগ্রহ করেছেন BORI এর প্রতিষ্ঠাতা আর.জি. ভান্ডারকার, সেটাও প্রায় ১৬ বছরের অদম্য সাধনার ফলে। BORI তে সংরক্ষিত ২৮,০০০ পাণ্ডুলিপির মধ্যে টি পাণ্ডুলিপি একদম সম্পূর্ণ (Complete) অবস্থায় রয়েছে।

ক্রিটিকাল এডিশনের জন্য যে ৩০ টি পাণ্ডুলিপি ব্যবহার করা হয়েছে তার মধ্যে একটি পাণ্ডুলিপি রয়েছে সারদালিপিতে  যা কাশ্মীর থেকে সংগ্রহ করা হয়। এই পাণ্ডুলিপিটি অত্যন্ত অথেনটিক গুরুত্বপূর্ণ। এই পাণ্ডুলিপিটি গাছের ছালে (birch bark) লেখা পাণ্ডুলিপি। বাকি ২৯ টি পাণ্ডুলিপি দেবনগরী লিপিতে লেখা। তবে সবগুলো পাণ্ডুলিপির ভাষাই সংস্কৃত। ৩০ টি পাণ্ডুলিপির মধ্যে ১৬ টি পাণ্ডুলিপি হলো সায়ণভাষ্যের পাঁচটি পাণ্ডুলিপি পদপাঠের। টি পাণ্ডুলিপিতে শুধু ব্যাসিক মন্ত্র পাওয়া যায় এবং টি পাণ্ডুলিপিতে মন্ত্রের সাথে পদপাঠও রয়েছে। পদপাঠ শব্দগুলোকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করতে শব্দের অর্থ ভালোভাবে বুঝতে খুব সহায়তা করে। ক্রিটিকাল এডিশনে একমাত্র সায়ণভাষ্যকেই অথেনটিক হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং অন্যান্য নব্য ভাষ্যগুলোকে বায়াসনেসের (Biasness) জন্য বর্জন করা হয়। অর্থাৎ ক্রিটিকাল এডিশনে সর্বোচ্চসংখ্যক পাণ্ডুলিপি, সবচেয়ে প্রাচীন পাণ্ডুলিপি (কাশ্মীর থেকে প্রাপ্ত) সবচেয়ে প্রাচীন ভাষ্যের সহায়তা নেওয়া হয়।  

ঋগ্বেদের ক্রিটিকাল এডিশন প্রস্তুত করতে যে ৩০ টি পাণ্ডুলিপি ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো কাশ্মীর ছাড়াও ভারতের গুজরাট, রাজাপুতানা মধ্যপ্রদেশসহ বিভিন্ন প্রদেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিলো। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় বেশিরভাগ পাণ্ডুলিপিই খুব ভালো অবস্থায় সংগ্রহ করা হয়, কেবল কাশ্মীর থেকে সংগৃহিত গাছের ছালে লেখা পাণ্ডুলিপিটিই খারাপ অবস্থায় সংগ্রহ করা হয়। 

ঋগ্বেদের এই ক্রিটিকাল এডিশন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। ঋগ্বেদের ক্রিটিকাল এডিশন ঋগ্বেদের বৈশিষ্ট্য নিয়ে ইউনেস্কোর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে একটি বিশেষ প্রবন্ধও রয়েছে। আমরা আলাদা ব্লগে ঋগ্বেদ সংহিতার ক্রিটিকাল এডিশন নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করবো।

প্রস্তুতকারকঃ

/ সুধা গোপালকৃষ্ণ, মিশন পরিচালক, ন্যাশনাল মিশন ফর মনুস্ক্রিপ্ট
/ এম. জি. ধাদফালে, সম্মানিত সচিব, BORI

রেফারি (বিচারক):  

/ অধ্যাপক ভাষাবিদ জর্জ কার্ডনা, পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
/ অধ্যাপক টি. এন. ধর্মাধিকারী, সাবেক পরিচালক, বৈদিক সংশোধন মণ্ডল 
/ অধ্যাপক পি. জি. লালে, অবসরপ্রাপ্ত সংস্কৃত অধ্যাপক, ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (হায়দারবাদ)
/ অধ্যাপক সরোজা বাটে, অবসরপ্রাপ্ত সংস্কৃতি অধ্যাপক বিভাগীয় প্রধান, পুনে বিশ্ববিদ্যালয় এবং সম্মানিত সচিব, BORI.

তথ্যসূত্রঃ 
Bhandarkar Oriental ResearchInstitute (BORI)
The Oriental Institute, Baroda 
বৈদিক সংশোধন মণ্ডল
Unesco 

© SPS শাস্ত্র গবেষণা কমিটি।
🖋️ ড. অনিরুদ্ধ প্রতাপ, শ্রী অনিক কুমার সাহা
Sanatan Philosophy and Scripture (SPS)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ