পৌষ মাসে বিবাহনুষ্ঠান বারণ কেন?

 

সাম্প্রতিক সময়ে একজন সনাতনী সেলিব্রিটির (বিদ্যা সিনহা সাহা মীম) বিয়ে নিয়ে তোলপাড় অবস্থা যে সনাতন সংস্কৃতিতে কি পৌষ মাসে বিয়ে হবে নাবিভিন্ন জন বিভিন্ন মত দিচ্ছেন। সেই সেলিব্রিটির বিয়ে নিয়ে আমাদের কোন আপত্তি নেই কারণ তিনি সনাতন রীতি মেনে একজন সনাতনীকেই বিয়ে করেছেন। বিয়েটা পৌষ মাসে করেছেন সেটা নিয়েও আপত্তি করবো না কারণ তিনি কোন প্রেক্ষাপটে (আপদকালীনও হতে পারে এবং শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতাও হতে পারে) এই মাসে বিয়ের আয়োজন করেছেন সেটা আমাদের জানা নেই। এটা তার আপদকালীন পরিস্থিতিও হতে পারে যার বিধানও আমাদের শাস্ত্রে আছে।

কিন্তু, সনাতন সংস্কৃতিতে সামগ্রিকভাবে পৌষ মাসে বিবাহনুষ্ঠান বারণ এবং এর পেছনে শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যাও আছে। কেউ কেউ নিজ আনুকুল্যে শাস্ত্রের অর্ধ ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন তবে আমরা পূর্ণ ব্যাখ্যাই তুলে ধরবো। আমাদের মূল আলোচ্য বিষয় এটাই যে কেন পৌষ মাসে বিবাহনুষ্ঠান বারণ করা হয়েছে।

শাস্ত্রবিধির আশ্বলায়ন গৃহ্যসূত্রের ১ম অধ্যায় ৪র্থ খণ্ডের ১ম সূত্রেই এই বিষয়ে উল্লেখ আছে। 

"উদগয়ন আপূর্য়মাণপক্ষে কল্যাণে নক্ষত্রে 
চৌলকর্মোপনয়নগোদান বিবাহাঃ।।১।।"
~ আশ্বলায়ন গৃহ্যসূত্র [//]

অনুবাদঃ  সূর্যের উত্তরায়ণের সময়ে শুক্লপক্ষে শুভ নক্ষত্রে (শুভক্ষণে) চৌলকর্ম, উপনয়ন, গোদান বিবাহ (অনুষ্ঠিত হবে)

বিবৃতিঃ উদক্ + অয়ন = উদগয়ন; সূর্যের উত্তরদিকে আপাত গমন। আপুর্যমাণ পক্ষ= যে পক্ষে চন্দ্ৰ ক্রমশ ষোল কলায় পূর্ণ হয় এবং সেই কারণে পক্ষটি ক্রমশ আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে অর্থাৎ শুক্লপক্ষ। 

এখানে স্পষ্ট সূর্যের উত্তরায়ণ, চন্দ্রের শুক্লপক্ষ এবং নক্ষত্রের শুভ অবস্থানকে (শুভক্ষণ) নির্দেশ করা হয়েছে। হিন্দু শাস্ত্র সবচেয়ে নিখুঁত তাই কেবল চন্দ্র-ধারা বা কেবল সৌর-ধারা না মেনে চন্দ্র-সৌর ধারাকে বিবেচনায় রাখে যেখানে নক্ষত্রের অবস্থানকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। 

এই বিষয়ে আরেকটা উদাহরণ উপস্থিত করবো৷ মহাভারতের ভীষ্ম অনুশাসন পর্বে দেখা যায় মহামতি ভীষ্ম শরশয্যায় উত্তরায়ণের অপেক্ষায় ছিলেন। অর্থাৎ তিনি উত্তরায়ণেই দেহত্যাগের অপেক্ষায় ছিলেন। এই বিষয়ে শ্রীমদভগবদগীতার অষ্টম অধ্যায়েও উল্লেখ আছে৷ এখন অনেকে বলতে পারেন শুক্লপক্ষ মানেই শুভক্ষণ তবে তারা সূর্য (উত্তরায়ণ) নক্ষত্রকে (শুভক্ষণ) অবজ্ঞা করছেন। কিন্তু মহাভারতের ভীষ্মপর্বের ১১৬ অধ্যায়ের ১৪নং শ্লোকে দেখা যাচ্ছে মহামতি ভীষ্ম চন্দ্র সূর্য উভয়েরই গতির পরিবর্তনের অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি কেবল চন্দ্রের উপর নির্ভরশীল (শুক্লপক্ষ) হলে শরশয্যার ৫৮ দিনের যেকোনো একদিনই দেহত্যাগ করতে পারতেন। উত্তরায়ণের শুরুতে তিনি পবিত্র মাঘ মাসেরও উল্লেখ করেছেন। কেন সনাতন শাস্ত্র সংস্কৃতিতে সূর্য, চন্দ্র নক্ষত্রকে বিবেচনায় নেওয়া সে বিষয়ে পরবর্তী পর্বে আলোচনা করবো। দয়াকরে কেউ আবার সৌর ক্যালেন্ডারের ২২ শে ডিসেম্বর থেকে ২১ শে জুনকে উত্তরায়ণ হিসেবে সামনে নিয়ে আসবেন না।


চন্দ্র-সৌর ধারায় পৌষ সংক্রান্তি/মকরসংক্রান্তি নতুন ফসলের উৎসব ছাড়াও সনাতন সংস্কৃতিতে 'উত্তরায়ণের সূচনা' হিসেবে পরিচিত। সনাতন সংস্কৃতিতে একে অশুভ সময়ের শেষ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় পঞ্জিকা মতে। পৌষের শেষেই উত্তরায়ণের শুরু। এই সময় সূর্য নিজ কক্ষপথে ধনু রাশি থেকে মকর রাশিতে প্রবেশ করে। এর থেকেই মকর সংক্রান্তির উৎপত্তি। 

তাহলে পৌষ মাস বর্জনের যে রীতি সেটা কিন্তু শতভাগ শাস্ত্রীয়, এটা কোন কুসংস্কার নয়। মহামতি ভীষ্মও উত্তরায়ণের অপেক্ষায় ছিলেন। হিন্দু সংস্কৃতিতে চন্দ্র-সৌর ধারায় মাঘ মাস থেকে শ্রাবণ ছয় মাস উত্তরায়ণ ধরা হয়। 

বিকল্প মতঃ

সনাতন শাস্ত্র কখনোই অনুদার নয় বরং আপদকালীন সময়কেও বিবেচনায় নেয়।  এই বিষয়ে আশ্বলায়ন গৃহ্যসূত্রে বলা হয়েছে। 

" সার্বকালম্ একে বিবাহম্।।২।।"
~ আশ্বলায়ন গৃহ্যসূত্র [//]

অনুবাদঃ অন্য মতে বিবাহ সবসময়ই অনুষ্ঠিত হতে পারে। 

স্বাভাবিকভাবেই সূত্র পূর্ব সূত্রকে অনুসরণ করে।

বিবৃতিঃ নানা সমস্যার উদ্ভব হতে পারে বলে কন্যা বিবাহযোগ্য/প্রাপ্তবয়স্কা হলেই শুভদিনের অপেক্ষায় না থেকে তার বিবাহের ব্যবস্থা করতে হবেএই হল অপর একদলের মত। 

এই হলো আপদকালীন বিধান যেখানে। এখন কেউ চাইলে পৌষ মাসে বিবাহনুষ্ঠানের আয়োজন করলে সেটা কেবল তাদেরই অভিরুচি। এজন্য তাদেরকে শূলেচড়ানো হবে না সনাতন সংস্কৃতিতে।

দ্বিতীয় পর্বঃ 

হিন্দুরা কেন চন্দ্র-সৌর ধারাকেই অনুসরণ করে এবং কেন এটা সর্বাপেক্ষা নির্ভুল এই বিষয়ে এখন আলোকপাত করা হবে। এখানে বহুল প্রচলিত তিনটি ধারা নিয়ে তুলনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে আলোচনা করা হবে। 

🟫 বহুল প্রচলিত ধারাগুলো হলোঃ
১) চন্দ্র ধারা
২) সৌর ধারা
৩) চন্দ্র-সৌর ধারা
ধারাবাহিক পারস্পরিক বিশ্লেষণে সনাতন সম্প্রদায় চন্দ্র-সৌর ধারাই গ্রহণ করে এসেছে পরম্পরাগতভাবে কারণ ইহাই সর্বাপেক্ষা নির্ভুল ও গ্রহণযোগ্য।

🔹 হিজরী ক্যালেন্ডারের বছর বার চন্দ্র মাসের সমন্বয়ে গঠিত। চাঁদ পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিন করতে ২৯.৫৩ দিন সময় নেয় তাই এক চান্দ্রমাস সমান ২৯.৫৩ দিন। তাহলে ১২ চান্দ্রমাসের হিসেবে এক হিজরী বছর হচ্ছে (১২ x ২৯.৫৩)= ৩৫৪.৩৬ দিন।
অর্থাৎ এটাকে আমরা বলতে পারি চন্দ্র বর্ষপঞ্জিকা যেখানে সূর্যের ঘূর্ণনকে সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। তবে যেহেতু সূর্যের বার্ষিক গতির হিসেবে একবছর সমান ৩৬৫ দিন সেহেতু এই ক্যলেন্ডারে প্রায় ১১ দিন কম হয়। এই সমস্যা দূরিকরণে প্রতি বছর ১১ দিন করে এগিয়ে নিয়ে আসা হয় যার কারণে হিজরী ক্যলেন্ডার এর সাথে ঋতুসমূহের ক্রমবিন্যাস অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই চন্দ্র ধারায় পহেলা বৈশাখের নির্দিষ্ট দিন গণনা সম্ভব নয়।

🔹 সৌর দিনপঞ্জিকা অর্থাৎ সূর্যের ঘূর্ণন গতির প্রেক্ষিতে পৃথিবীর অবস্থান অনুসারে যে দিনপঞ্জিকা তৈরী করা হয় যেমন গ্রেগরিয়ান দিনপঞ্জিকা। এই সৌর ধারাই বর্তমান যুগে বিশ্বব্যাপী অফিসিয়াল কাজের জন্য সবচেয়ে প্রচলিত ধারা কারণ এর কোন বিশেষ দিন ঠিক করার বা ফসল উৎপাদনের বা আবহাওয়া নির্ণয়ের আবশ্যকতা নেই । কিন্তু এতেও বিপত্তি কারণ পৃথিবীর সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে অর্থাৎ একবার ঘুরে আসতে প্রয়োজনীয় সময় ৩৬৫.২৫ দিন। কিন্তু ক্যালেন্ডার তৈরী করা হয় সমান ৩৬৫ টি ভাগে ভাগ করে।
এখন অতিরিক্ত ০.২৫ দিনকে এডজাস্ট করার জন্য প্রতি ৪ বছর পরপর (০.২৫ x ৪) = ১ দিন ফেব্রুয়ারী মাসে যোগ করা হয়।
🔸 সৌর-চন্দ্র ধারার দিন-পঞ্জিকা হলো সনাতন সংস্কৃতি ও পরম্পরা দ্বারা মান্য এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানের আলোকে নির্ভুল বর্ষ গণনা। বছর গণনার পাশাপাশি বিভিন্ন পবিত্র ও বিশেষ দিনসমূহ আগে থেকেই এমনকি বহু বছর আগে থেকেই সনাক্ত করে রাখা যায় এবং সাথে সাথে অঞ্চলভিত্তিক বিভিন্ন ঋতুসমূহ ও নির্দিষ্ট ফসলের জন্য উপযুক্ত সময় এমনকি আবহাওয়ার অবস্থাও প্রায় নির্ভুলভাবে নিরূপণ করে রাখা যায়। এক্ষেত্রে চন্দ্র-সূর্য এবং নক্ষত্রসমূহের গতিপথ ও অবস্থান বিবেচনা করেই দিনপঞ্জিকা বানাতে হবে অর্থাৎ সম্পূর্ণ সৌরজগতকে বিবেচনায় নিয়ে একটি নির্ভুল ও সর্বাপেক্ষা গ্রহণযোগ্য বর্ষ গণনা।


পৃথিবীর সর্বপ্রথম এবং নির্ভুল চন্দ্র-সৌর বর্ষপঞ্জিকা হল সনাতন বর্ষপঞ্জিকা যেটা প্রাচীন যুগের চীন, গ্রীস, পারস্য এবং প্রাচীন আরবেও ব্যপ্ত ছিল।
★ কিভাবে তৈরী করা হয় এই ক্যলেন্ডারটি?
🔻 চাঁদের হিসেবেঃ
চাঁদ পৃথিবীকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ তথা আবর্তিত হয়। আবার অন্যদিকে পৃথিবীও সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান এবং সূর্যও তার নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমন করে। এই সম্পূর্ণ পরিভ্রমন পথের মধ্যে মোট ২৮টি বৈদিক নক্ষত্র রয়েছে।এই ২৮ টি নক্ষত্র সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা সর্বপ্রথম অথর্ববেদের নক্ষত্র সুক্তের ৮ং মন্ত্রে (অথর্ববেদ ১৯/৮) পাওয়া যায়।প্রতিটি নক্ষত্রের ব্যসার্ধকে চাঁদ তার গতিপথ বরাবর প্রায় একদিনে (একদিনের কিছু কম সময়ে) পরিভ্রমন করে। তাই ২৮টি নক্ষত্রকে পরিভ্রমন করতে চাঁদের ২৭.৩২ দিন সময় লাগে। এই সময়কালকে বলে ক চান্দ্রমাস বা এক সিডেরিয়েল পিরিয়ড । প্রতিটি নক্ষত্রের ব্যসার্ধকে আবার সমান চারভাগে ভাগ করা হয় যার প্রত্যেকটিকে একটি করে পদ বলা হয়।


🔺 সূর্যের হিসেবঃ
চাঁদের এই পরিভ্রমন পথে যেমন ২৮টি নক্ষত্র দেখা যায় ঠিক তেমনি এই পথে গুরুত্বপূর্ন ৯টি অবস্থান বা বস্তু অবস্থিত। এদেরকে গ্রহ বলা হয় এবং একত্রে বলা হয় নবগ্রহ।
এগুলো হলো মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র, শনি, রবি(সূর্য), সোম(চন্দ্র), রাহু, কেতু।
এখানে বিশেষভাবে রাহু এবং কেতু হল দুটি বিশেষ বিন্দু যেখানে চন্দ্রের এবং সূর্যের কক্ষপথ পরস্পরকে ছেদ করে।ওই দুটি বিন্দুকে আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষায় যথাক্রমে এসেন্ডিং এবং ডিসেন্ডিং সোলার নোডিউলস বলে।
এই বিন্দুদ্বয়ে চন্দ্র ও সূর্যের অবস্থান ভেদে চন্দ্রের কারনে আমরা পৃথিবী থেকে সূর্যের আলো অথবা সূর্যের কারনে চাঁদকে দেখতে পাইনা অর্থাৎ চন্দ্রগ্রহন বা সূর্যগ্রহন হয়।
🔘 কিছু বিশেষত্ত্বঃ
▪️ সৌর-চন্দ্র দিনপঞ্জিকা তথা সনাতন বর্ষ গণনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এখানে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে একটি দিন শুরু হয় অন্যদিকে ইংরেজী ক্যলেন্ডারে দিন শুরু হয় মধ্যরাতে তথা রাত বারটায়।
▪ সৌর-চন্দ্র দিন-পঞ্জিকায় তাই চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্রের সাথে পৃথিবীর অবস্থান বিবেচনায় দিন গণনা করা হয় তাই গাণিতিক হিসেবে বহু আগে থেকেই হিন্দুদের বিভিন্ন পূজাপার্বণ, ঈদ, বুদ্ধপূর্নিমা প্রভৃতির তারিখ এবং স্পেসিফিক সময় সহ উল্লেখ করা যায়।
▪️এই সনাতনী দিনপঞ্জি ব্যবহার করে পূর্ণিমা-অমাবশ্যার দিন ও ক্ষণ (সময়) একদম নির্ভুলভাবে ৫০ বছর আগে থেকেই নির্ধারণ করা সম্ভব। প্রাকৃতিক ঋতুচক্র যেহেতু গ্রহ নক্ষত্রের গতিবিধির উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল তাই সম্পূর্ণ বছর এমনকি আগামী বছরসমূহের আবহাওয়া সম্পর্কেও প্রাথমিক একটা ধারণা এই দিনপঞ্জি থেকে দেওয়া সম্ভব। সনাতনী দিনপঞ্জি ব্যবহার করে আবহাওয়ার সিস্টেমেটিক বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে অঞ্চলভেদে একটা সামঞ্জস্যপূর্ণ ঋতুচক্রও নির্ণয় করা সম্ভব।

উপরের দীর্ঘ আলোচনায় এটা অন্তত স্পষ্ট হয় আমাদের পূর্বজরা শাস্ত্রীয় বিচারবিবেচনা করেই পৌষ মাসে বিবাহনুষ্ঠানে অনুৎসাহিত করেছেন। তাই শাস্ত্রীয় বিচার-বিশ্লেষণ ব্যতিরেকে কোন সনাতনী সংস্কার, আচার রীতিকে কুসংস্কার বলা অনুচিত। আপনি বা আপনারা সেটা গ্রহণ না করলে সেটা একান্তই আপনার ব্যক্তি স্বাধীনতা। 

©স্টিমন অনিক

প্রচারেঃ
SPS শাস্ত্র গবেষণা কমিটি। 
সনাতন শাস্ত্র দর্শন প্রচারে বদ্ধপরিকর।।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ