
বাংলা পহেলা বৈশাখ ও বাংলা সন নিয়ে কিছু বিষয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।
১/ বাংলা সনের প্রথম দিন কবে ও কিভাবে নির্ণয় করে?২/ বাংলা সনের প্রবর্তন ও প্রবর্তক।।
বছরের প্রথম দিন নির্ণয় কিংবা প্রকৃত বাৎসরিক গণনা সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। সনাতন সম্প্রদায় হাজার বছর ধরে শুদ্ধ ও সঠিক পদ্ধতিরই অনুসরণ করে এসেছে পরম্পরাগতভাবে।।

১) চন্দ্র ধারা২) সৌর ধারা৩) চন্দ্র-সৌর ধারা
ধারাবাহিক পারস্পরিক বিশ্লেষণে সনাতন সম্প্রদায় চন্দ্র-সৌর ধারাই গ্রহণ করে এসেছে পরম্পরাগতভাবে কারণ ইহাই সর্বাপেক্ষা নির্ভুল ও গ্রহণযোগ্য।

অর্থাৎ এটাকে আমরা বলতে পারি চন্দ্র বর্ষপঞ্জিকা যেখানে সূর্যের ঘূর্ণনকে সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। তবে যেহেতু সূর্যের বার্ষিক গতির হিসেবে একবছর সমান ৩৬৫ দিন সেহেতু এই ক্যলেন্ডারে প্রায় ১১ দিন কম হয়। এই সমস্যা দূরিকরণে প্রতি বছর ১১ দিন করে এগিয়ে নিয়ে আসা হয় যার কারণে হিজরী ক্যলেন্ডার এর সাথে ঋতুসমূহের ক্রমবিন্যাস অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই চন্দ্র ধারায় পহেলা বৈশাখের নির্দিষ্ট দিন গণনা সম্ভব নয়।

এখন অতিরিক্ত ০.২৫ দিনকে এডজাস্ট করার জন্য প্রতি ৪ বছর পরপর (০.২৫ x ৪) = ১ দিন ফেব্রুয়ারী মাসে যোগ করা হয়।

পৃথিবীর সর্বপ্রথম এবং নির্ভুল চন্দ্র-সৌর বর্ষপঞ্জিকা হল সনাতন বর্ষপঞ্জিকা যেটা প্রাচীন যুগের চীন, গ্রীস, পারস্য এবং প্রাচীন আরবেও ব্যপ্ত ছিল।
★ কিভাবে তৈরী করা হয় এই ক্যলেন্ডারটি?

চাঁদ পৃথিবীকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ তথা আবর্তিত হয়। আবার অন্যদিকে পৃথিবীও সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান এবং সূর্যও তার নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমন করে। এই সম্পূর্ণ পরিভ্রমন পথের মধ্যে মোট ২৮টি বৈদিক নক্ষত্র রয়েছে।এই ২৮ টি নক্ষত্র সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা সর্বপ্রথম অথর্ববেদের নক্ষত্র সুক্তের ৮ং মন্ত্রে (অথর্ববেদ ১৯/৮) পাওয়া যায়।প্রতিটি নক্ষত্রের ব্যসার্ধকে চাঁদ তার গতিপথ বরাবর প্রায় একদিনে (একদিনের কিছু কম সময়ে) পরিভ্রমন করে। তাই ২৮টি নক্ষত্রকে পরিভ্রমন করতে চাঁদের ২৭.৩২ দিন সময় লাগে। এই সময়কালকে বলে এক চান্দ্রমাস বা এক সিডেরিয়েল পিরিয়ড । প্রতিটি নক্ষত্রের ব্যসার্ধকে আবার সমান চারভাগে ভাগ করা হয় যার প্রত্যেকটিকে একটি করে পদ বলা হয়।

চাঁদের এই পরিভ্রমন পথে যেমন ২৮টি নক্ষত্র দেখা যায় ঠিক তেমনি এই পথে গুরুত্বপূর্ন ৯টি অবস্থান বা বস্তু অবস্থিত। এদেরকে গ্রহ বলা হয় এবং একত্রে বলা হয় নবগ্রহ।
এগুলো হলো মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র, শনি, রবি(সূর্য), সোম(চন্দ্র), রাহু, কেতু।
এখানে বিশেষভাবে রাহু এবং কেতু হল দুটি বিশেষ বিন্দু যেখানে চন্দ্রের এবং সূর্যের কক্ষপথ পরস্পরকে ছেদ করে।ওই দুটি বিন্দুকে আধুনিক বিজ্ঞানের ভাষায় যথাক্রমে এসেন্ডিং এবং ডিসেন্ডিং সোলার নোডিউলস বলে।
এই বিন্দুদ্বয়ে চন্দ্র ও সূর্যের অবস্থান ভেদে চন্দ্রের কারনে আমরা পৃথিবী থেকে সূর্যের আলো অথবা সূর্যের কারনে চাঁদকে দেখতে পাইনা অর্থাৎ চন্দ্রগ্রহন বা সূর্যগ্রহন হয়।

সৌর-চন্দ্র দিনপঞ্জিকা তথা সনাতন বর্ষ গণনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এখানে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে একটি দিন শুরু হয় অন্যদিকে ইংরেজী ক্যলেন্ডারে দিন শুরু হয় মধ্যরাতে তথা রাত বারটায়।
সৌর-চন্দ্র দিন-পঞ্জিকায় তাই চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্রের সাথে পৃথিবীর অবস্থান বিবেচনায় দিন গণনা করা হয় তাই গাণিতিক হিসেবে বহু আগে থেকেই হিন্দুদের বিভিন্ন পূজাপার্বণ, ঈদ, বুদ্ধপূর্নিমা প্রভৃতির তারিখ এবং স্পেসিফিক সময় সহ উল্লেখ করা যায়।
এই সনাতনী দিনপঞ্জি ব্যবহার করে পূর্ণিমা-অমাবশ্যার দিন ও ক্ষণ (সময়) একদম নির্ভুলভাবে ৫০ বছর আগে থেকেই নির্ধারণ করা সম্ভব। প্রাকৃতিক ঋতুচক্র যেহেতু গ্রহ নক্ষত্রের গতিবিধির উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল তাই সম্পূর্ণ বছর এমনকি আগামী বছরসমূহের আবহাওয়া সম্পর্কেও প্রাথমিক একটা ধারণা এই দিনপঞ্জি থেকে দেওয়া সম্ভব। সনাতনী দিনপঞ্জি ব্যবহার করে আবহাওয়ার সিস্টেমেটিক বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে অঞ্চলভেদে একটা সামঞ্জস্যপূর্ণ ঋতুচক্রও নির্ণয় করা সম্ভব।

বৈশাখ মাসঃ গ্রীষ্ম ঋতুর প্রথম মাস বৈশাখের গ্রহাবস্থানের সাথে ৫ ই বৈশাখ পূর্ণিমা হর্ষণযোগযুক্ত হওয়ায় গ্রীষ্মের তাপদাহ স্মরণকালের রেকর্ড ছাড়াবে।
জ্যৈষ্ঠ মাসঃ এই মাসের ১৭ তারিখ বুধের মিথুন রাশিতে মৃগশিরা নক্ষত্রে পদার্পণ এবং ২০ তারিখ অমাবস্যা সুকর্মাযোগ যুক্ত হওয়ায় গ্রীষ্মের তাপদাহ অর্ধশত ডিগ্রী ছুঁইছুঁই হবে।
আষাঢ় মাসঃ এই মাসের আট তারিখ মঙ্গলের কর্কটরাশিতে পুনর্বসু নক্ষত্রে পদার্পন সেই সঙ্গে ১৫ তারিখ কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথি অতিগন্ডযোগ যুক্ত হওয়ায় ১, ৩, ১৬, ১৭ তারিখে ঝড় ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।
এইভাবে বিভিন্ন মাসের গ্রহ-নক্ষত্রের গতিবিধি ও অবস্থান বিবেচনায় খুব সহজেই গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বষন্ত এই ষড়ঋতুর বিন্যাস সম্ভব। ৫০ টাকার হিন্দু দিনপঞ্জিতে সারাবছরের প্রায় নির্ভুল আবহাওয়া ফোরকাস্টিং পাওয়া যায়৷

বাল্মীকি রামায়নের ১.৮.৮-১০ এ শ্রীরামচন্দ্রের জন্মদিনের বিবরন দেয়া আছে এভাবে-
১. রবি অশ্বিনীতে (Sun in arise) অর্থাত্ সেদিন সূর্য এবং অশ্বিনী বা Aries নামক নক্ষত্রটি একই সরলরেখায় অবস্থিত ছিল।২. সোম বা চন্দ্র ছিল Pollux বা পুনর্বসু নামক নক্ষত্রের সাথে একই সরলরেখায়।৩. শনি ছিল বিশাখা বা Libra নামক নক্ষত্রের সরলরেখায়।৪. বুধগ্রহ ছিল রেবতী বা Pisces নামক নক্ষত্রের সমান্তরালে।
সুতরাং এই বর্ণনা থেকে সহজেই বের করা যায় শ্রীরামচন্দ্রের জন্মদিন ১০ ই জানুয়ারী এমনকি সময়ও বের করা যায় এবং সেটা দুপুর ১২ঃ০৫ ঘন্টা এমনকি জন্মসালও প্রমাণসহ উপস্থাপন করা যায় খ্রীস্টপূর্ব ৫১১৪। শ্রী হনুমান যে খ্রীস্টপূর্ব ৫০৭৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর লঙ্কার অশোক বাটিকায় সীতাদেবীর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন সেটাও এতবছর পর বের করা সম্ভব হয়েছে।।
★ তাহলে পহেলা বৈশাখের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি কেন ও সমাধান কি?
জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রামাণিক সূত্রমতে সূর্য যেইদিন এবং যেই মূহুর্তে Ecliptic এ ৩ ডিগ্রী ২০মিনিট অক্ষাংশে বিশাখা বা Libra নামক নক্ষত্রের সাথে এক সরলেখায় অবস্থান নেবে সেই মুহুর্ত থেকে পহেলা বৈশাখ শুরু হবে এবং সৌর-চন্দ্র দিনপঞ্জি অনুযায়ী সেটা ইংরেজি সনের ১৫ এপ্রিল সম্পন্ন হয়।
পহেলা বৈশাখের দিনক্ষণ নিয়ে বিভ্রান্তি দূরিকরণের আগে আরেকটি বিভ্রান্তি দূর করতে হবে।

★ বাংলা সনের শুরু কে করেন?
এই প্রশ্নের উত্তরে প্রামাণিক ভিত্তি ছাড়াই সম্রাট আকবরের নাম প্রচলন করা হয়েছে। কিন্তু সত্যতা কি?
খুব সহজ হিসেবে এই বছর ১৪২৮ বঙ্গাব্দ যদি ২০২১ খ্রিস্টাব্দ হয়, তাহলে বঙ্গাব্দের প্রথম বছর নিশ্চয় ২০২১-১৪২৭ অর্থাৎ ৫৯৪ খ্রিস্টাব্দ হবে।
ষষ্ঠ শতকের শেষ দশকে গুপ্ত সাম্রাজ্যের সামন্তরাজা বঙ্গাধিপতি রাজা শশাঙ্ক নিজেকে বঙ্গের স্বাধীন সার্বভৌম শাসক হিসেবে ঘোষণা করেন। মহারাজা শশাঙ্ক স্বাধীন নৃপতি হিসেবে তার শাসনকালের সূচনাকে স্মরণীয় করে রাখতে সূর্যসিদ্ধান্তভিত্তিক (সৌর-চন্দ্র ধারা) বর্ষপঞ্জী অনুসারে বঙ্গাব্দের প্রচলন করেন। বঙ্গাব্দ ও খ্রিস্টাব্দের পার্থক্যের সাথে রাজা শশাঙ্কের শাসনকাল বিশ্লেষণ করলেই প্রকৃত সত্য বেড়িয়ে আসে।
[https://swarajyamag.com/ideas/no-akbar-did-not-create-the-bengali-calendar-its-a-case-of-identity-theft-by-insecure-islamists-2]

“সৌর বিজ্ঞান ভিত্তিক গাণিতিক হিসাবে ৫৯৪ খ্রিষ্টাব্দের ১২ এপ্রিল, সোমবার, সূর্যোদয় কালই বঙ্গাব্দের আদি বিন্দু।”

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তিনি 'তারিখ-ই-ইলাহী' নামে একটি সৌর বর্ষপঞ্জী চালু করেছিলেন এবং তার ভিত্তিবর্ষ ছিল ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দ যা আকবরের শাসনকালের প্রথম বছর।
অর্থাৎ 'তারিখ-ই-ইলাহী' শুরুই হয় তার ২৯তম বর্ষ থেকে। ওদিকে ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দ ছিল ৯৬৩ হিজরী।
এক্ষেত্রে প্রচারকারীদের মতে ১৫৫৬ খৃষ্টাব্দকে ৯৬৩ বঙ্গাব্দ ধরে ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে তারিখ-ই-ইলাহীর সাথে সাথে বঙ্গাব্দও চালু করেন আকবর। অর্থাৎ বঙ্গাব্দ শুরু হয় তার ৯৬৩ + ২৯ = ৯৯১তম বর্ষ থেকে। চান্দ্রবর্ষ হওয়ায়, হিজরী ততদিনে আবার এক বছর এগিয়ে গেছে। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দ ছিল ৯৯২ হিজরী। আকবরপন্থীদের দাবী অনুসারে এই বছর থেকে যুক্ত হল ২৯ তারিখ-ই-ইলাহী ও ৯৯১ বঙ্গাব্দ।
★ আকবর ‘বঙ্গাব্দ’ বা ‘বাংলা সন’ চালু করেছিলেন? আসুন দেখা যাক ইতিহাস কি বলে? যুক্তিপ্রমাণাদি কি বলে?
কিছু ফ্যাক্টর বিবেচনায় নেওয়া যাক,




আকবরের আমলের সরকারী ইতিহাসে বরং বলা হচ্ছে হিন্দুস্থানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বর্ষপঞ্জীগুলোর মধ্যে সামঞ্জস্য আনতেই নতুন বর্ষপঞ্জী তারিখ-ই-ইলাহীর সূচনা হয়। এখানে বিবেচ্য যে, ঠিক দেড় বছর আগে, অক্টোবর ১৫৮২-তে পোপ অষ্টম গ্রেগরী পূর্বতন জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের সংস্কার সাধন করে নতুন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রণয়ন করে ইউরোপে যে খ্যাতি অর্জন করেন, আকবরও ঠিক সেটার অনুসরণ করে একটি সৌর ক্যালেন্ডার "তারিখ-ই-ইলাহী" প্রণয়ন করেন। এখানে মোটা দাগে স্পষ্ট যে বাংলা সন সৌর-চন্দ্র ধারা অনুসরণ করলেও আকবরের তারিখ-ই-ইলাহী গ্রেগারিয়ান সৌর ধারা অনুসরণ করে। তিনি বরং মধ্য এশিয়ার সমরকন্দের গুরগানি গণনাপদ্ধতিকে ভিত্তি করেই তারিখ-ই-ইলাহী বর্ষপঞ্জী তৈরি করেন জ্যোতির্বিদ ফতুল্লাহ সিরাজীকে দিয়ে।
আকবর যে বঙ্গাব্দ প্রতিষ্ঠা করেননি তার পাথুরে প্রমাণও রয়েছে। নীতিশ সেনগুপ্তর বই ‘দ্য ল্যান্ড অফ টু রিভার্স’-এ উল্লেখ রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার ডিহারগ্রাম ও সোনাতপন গ্রামের হাজার বছরেরও প্রাচীন টেরাকোটার একাধিক শিব মন্দিরের অস্তিত্ব আছে। ওই মন্দির দু'টির গায়ে বঙ্গাব্দের কথা খোদিত রয়েছে, যা আকবরের থেকেও বহু প্রাচীন।
[তথ্যসংগ্রহঃ বঙ্গদেশ ব্লগ হতে]


এই ‘পঞ্জিকা সংস্কার কমিটি’ই বাংলা পঞ্জিকাকে খানিক পরিবর্তন করে একটি নতুন পঞ্জিকা প্রস্তাব করল, যা বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় ক্যালেন্ডার। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এর নেতৃত্বে গঠিত কমিটি একে সম্পূর্ন ইংরেজী ক্যলেন্ডারের অনুকরনে সাজানোর প্রস্তাব দেন এবং ফলস্বরুপ এর স্বকীয়তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাদের প্রস্তাবনাগুলো ছিল এরুপ-
১. বৈশাখ থেকে ভাদ্র পর্যন্ত প্রথম পাঁচ মাস ৩১ দিনে হবে।২. চৈত্র থেকে আশ্বিন পরবর্তী সাতমাস ৩০ দিনে হবে।৩. প্রতি লিপ ইয়ারে ফাল্গুন মাসের সাথে এক দিন যুক্ত হবে।








সবাইকে শুভ নববর্ষ।।
© তথ্য সংগ্রহ, বিন্যাস ও বিশ্লেষণঃ স্টিমন অনিক
0 মন্তব্যসমূহ