💥 সনাতনী পরম্পরা কয়েকশত বছরের না বরং হাজার হাজার বছরের। হাজার বছরের সনাতনী শাস্ত্র, দর্শন ও পরম্পরায় প্রতিমা পুজা ছিল এবং যুগে যুগে মান্যতাও পেয়েছে। এমনকি সনাতন দর্শনের প্রতিমা পুজা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে প্রাচীন গ্রীস থেকে শুরু করে ইজিপ্টেও। ভারতীয় ইতিহাসের হাজার বছরের প্রাচীন সভ্যতায়ও প্রতিমা পুজো ও মন্দিরের অস্তিত্ব প্রমাণিত ও মান্য।। আমাদের পূর্ব পুরুষরা এই প্রতিমা ও মন্দির রক্ষায় অকাতরে জীবনও বিলিয়ে দিয়ে গেছে।
★ তাহলে প্রতিমা পুজা নিয়ে কদাচারী শুরু হলো কবে থেকে?
💥ভারতবর্ষে যখন বহিরাগত লুটেরাদের আগমন হলো তখন থেকেই মন্দির ও মূর্তি ভাঙার সংস্কৃতি শুরু তারপর সেটা চলমান ছিল শত শত বছর কিন্তু একদিকে ওরা ভেঙেছে আর অন্যদিকে আমাদের পূর্বজরা সেগুলো রক্ষা করেছে নাহলে পুননির্মাণ করেছে অর্থাৎ ভারতভূমিকে কখনোই প্রতিমা কিংবা মন্দির শূন্য হতে দেওয়া হয় নি। ওরা তখন প্রতিমা পুজা করলে নরকে যেতে হবে ফতোয়া দিয়ে হাজারে হাজারে সনাতনীকে ধর্মান্তরিত করেছে কিন্তু কোটি কোটি সনাতনী মন্দিরের বিগ্রহে নিজেদের শপে দিয়ে ধর্ম রক্ষা করেছে। যবনের দল ব্যার্থ হয়ে আমাদের মধ্যেই প্রতিমা বিরোধী সমাজের জন্ম দিয়ে ভারতভূমিকে মন্দিরশূন্য করার পায়তারা অব্যাহত রাখে কিন্তু সনাতনীরা তাতেও সায় না দিয়ে মন্দিরের সংখ্যা বাড়িয়েছে এবং সেটা বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছে এমনকি নাসার বিজ্ঞানী সুনিতা উইলিয়ামস মহাশূন্যেও গণপতির মূর্তি নিয়ে গেছে। এমনকি সমগ্রঃ বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে মাটি খুড়লেই বেড়িয়ে আসে সনাতনী দেবদেবীর মূর্তি এবং প্রতিটি মূর্তি সনাতনী চিহ্ন ও অস্তিত্ব বহন করে।
💥 এরপর কদাচারীর দল আমাদের শস্ত্রের ভূল ব্যাখ্যা অর্থাৎ তাকিয়ার মাধ্যমে প্রচার করে আমাদের শাস্ত্রে প্রতিমা পুজো নাকি নিষিদ্ধ। তাদেরকে জবাব দিতে ও সনাতনী তরুণ সমাজকে সত্য জানাতেই আজকের এই দীর্ঘ পোস্ট। পয়েন্ট ধরে ধরে আলোচনা করব।
১/ কদাচারীদের অপপ্রচার হচ্ছে যে বেদ, গীতা উপনিষদে নাকি সনাতনীদের সরাসরি প্রতিমা পুজো নিষিদ্ধ করেছে। এই অপপ্রচারের খন্ডন দেওয়া হলো।
💥https://sanatanphilosophyandscripture.blogspot.com/...
২/ ওদের অপ্রচার হচ্ছে সনাতনীরা নাকি কেবল মাটি, কাঠ ও পাথরের কাঠামোকেই ঈশ্বর ধরে পুজো করে। এই অপপ্রচারের খন্ডন করব যুক্ত ও দর্শন দিয়ে।
💥ক)https://sanatanphilosophyandscripture.blogspot.com/...
💥খ)https://sanatanphilosophyandscripture.blogspot.com/...
৩/ এরপর চলে আসে এক কদাচারী স্বঘোষিত আত্মজ্ঞানী সমাজ এবং তারা বলতে চেষ্টা করে প্রতিমা পুজো নগন্য উপাসনা স্তর। তারা দম্ভের সাথে নিজেদেরকে নিরাকার ঈশ্বরের উপাসক দাবী করে প্রতিমা পুজারী সনাতনীদেরকে নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। এই কদাচারীর জবাবও দিব যুক্তি ও দর্শন দিয়ে।
💥https://sanatanphilosophyandscripture.blogspot.com/...
৪/ এরপর একদল আবার পরমেশ্বরের নিরাকারতত্ত্বকে প্রচার করে। সেটা নিয়ে আপত্তির কিছু নেই কারণ ইহাও শাস্ত্রসিদ্ধ। সনাতন দর্শনে নিরাকার বলতে অনাদি অনন্ত পরমেশ্বরের অচিন্তনীয় রূপকেই প্রকাশ করে তবে এটাকে যদি কেউ প্রচার করে যে নিরাকার অর্থ তিনি কেবল একটা অনুভূতি ছাড়া কিছুই না তবে এর ব্যাখ্যা পবিত্র বেদ-বেদান্ত-বেদাঙ্গ হতেই দেওয়া যায়।
💥https://sanatanphilosophyandscripture.blogspot.com/...
৫/ পরবর্তীতে তারা প্রচার করে যে ঈশ্বরের কোন সাকাররূপ সম্ভব নয়। সাকারবাদের ব্যাখ্যা তারা নিজেদের মতবাদ দিয়ে বিশ্লেষণ করে নাকচ করে দেয়। এর জবাবে কিছু শাস্ত্রীয় বিশ্লেষণ।
💥https://sanatanphilosophyandscripture.blogspot.com/...
৬/ সাকারবাদের গূঢ়তত্ত্বকে তারা তাদের স্বঘোষিত এককতত্ত্বে বিচার করে এবং সনাতন দর্শনের বিশাল মহাসমূদ্রকে তারা সামান্য কূপে আবদ্ধ রাখতে চায়। তারা বুঝতে ব্যার্থ হয় যে সনাতন দর্শন এককতত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত কোন মতবাদ নয় যে পরমেশ্বরকে একটা নির্দিষ্ট তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত করে মানুষের ভাবনার জগতকে সংকুচিত করে দিবে। সনাতন দর্শনে ঈশ্বর প্রত্যেকটি মানুষের স্ব স্ব ভাবে অধীষ্ঠিত। সনাতন দর্শন কোন স্পেসিফিক ব্যক্তির মতবাদ নয় বরং চিরন্তন সত্য ধর্ম যা সকলের জন্যই সত্য।
💥https://sanatanphilosophyandscripture.blogspot.com/...
৭/ বেদের পুরুষ সুক্তে পরমেশ্বরের যে রূপ প্রকাশিত তাহা মাহাভারতে পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে যে বিশ্বরূপ দেখিয়েছেন প্রায় তাহারই অনুরূপ। কেউ যদি সেটাকে রূপক হিসেবে গ্রহণ করে তবে তাহা তাহাদিগের নিজস্ব ভাব এবং কেউ যদি তাহা এবসুলেট হিসেবে নেয় সেটাও তাহাদিগের নিজস্ব ভাব। পরমের সন্ধান না পেয়েই এই বিষয়ে সিদ্ধান্তঃ চাপিয়ে দেওয়া ত বাতুলতা। অনন্ত পরমেশ্বর, যাহার আদি ও অন্ত অচিন্তনীয় তিনি তাহার ভক্তের হৃদয়ে বিরাজ করে প্রকাশিত হলে সেটা নিয়ে কুমন্তব্য করা কি উচ্চস্তরের সাধনার মার্গ হতে পারে?
💥https://sanatanphilosophyandscripture.blogspot.com/...
৮/ তাহারা প্রচার করে নিরাকার উপাসনা নাকি উচ্চস্তরের সাধনা আর প্রতিমা পুজা নিম্মস্তরের এবং এটা তারা তাচ্ছিল্যের সুরে বলে। এই বিষয়ে তারা স্বামী বিবেকানন্দের একটা বানীও ব্যবহার করে। অথচ স্বামীজির সেই বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে প্রতীয়মান হয় যে তিনি প্রতিমা পুজাকে প্রাথমিক স্তরের উপাসনা বোঝাতে চেয়েছেন। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা শেষ না করেই কেউ যখন নিজেকে হুট করে পিএইচডি স্তরের শিক্ষার্থী দাবী করে বসে তবে তাহাদিগের মধ্যে কেবল দম্ভ ও উগ্রতাই প্রকাশ পাবে। অথচ অযোধ্যার স্বামী নারায়ণ নীলকণ্ঠী দেখিয়েছেন কিভাবে সাকার হইতে কিভাবে সাধন ও ত্যাগের মাধ্যমে নিরাকার উপাসনার স্তরে উন্নিত হতে হয়। অন্যদিকে স্বঘোষিত নিরাকারবাদীরা কিন্তু যাজ্ঞিক জীবনযাপন করেই নিজেদেরকে দম্ভের সাথে আত্মজ্ঞানী ঘোষণা করে দেয়। নিচের লিংকে উপাসনা মার্গের উদাহরণ দেখানো হল।
৯/ সবকিছুতে ব্যার্থ হয়ে তারা স্বামী বিবেকানন্দকে ব্যাবহার করে যাকে তারা মান্যই করে না। তারা একটা চিঠির খন্ডিত অংশ প্রচার করে যে স্বামীজী নাকি প্রতিমা পুজার বিরোধী ছিলেন এবং সব প্রতিমা ভেঙে ফেলতে বলেছেন। অথচ চিঠির বিশ্লেষণে বেড়িয়ে আসে ভিন্ন তথ্য এবং অন্যান্য বিশ্লেষণে প্রমাণিত হয় স্বামীজি প্রতিমা পুজার গূঢ়তত্ত্ব দারুণভাবে প্রচারও করেছেন। কদাচারের জবাব নিচের লিংকে দেওয়া হলো।
💥https://sanatanphilosophyandscripture.blogspot.com/...
১০/ এখানেও ব্যার্থ হয়ে তারা আবার প্রচার করে যে স্বামীজি বলেছেন বাহ্য সকল পুজো বাদ দিয়ে কেবল ওঙ্কার উপাসনা করতে। এটাও একটা খন্ডিত প্রচার এবং এই কদাচারীর খন্ডন নিচের লিংকে দেওয়া হলো।
💥https://sanatanphilosophyandscripture.blogspot.com/...
১১/ এখানেও ব্যার্থ কদাচারীর দল তারপর প্রচার করে স্বামীজি নাকি রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের মূর্তিও ফেলে দেওয়ার পক্ষে এবং ঘোর প্রতিমা পুজা বিরোধী। এই স্পষ্ট কদাচারীর জবাব স্পষ্টভাবেই নিচের লিংকে দেওয়া হলো।
💥https://sanatanphilosophyandscripture.blogspot.com/...
১২/ সবশেষে তার চায় প্রতিমা পূজো ও সাকারবাদের যৌক্তিক ব্যাখ্যা এবং নিজেদেরকে দাবী করে স্বঘোষিত যুক্তিবাদী। তাদেরকে যৌক্তিক ব্যাখ্যাও দেওয়া হলো এবং বুঝিয়ে দেওয়া হলো প্রতিমা পুজা যুক্তিসিদ্ধ বরং যাদের গূঢ়তত্ত্ব অনুধাবনের যোগ্যতা নেই তারাই যুক্তি অনুধাবনে ব্যার্থ হয়।
💥https://sanatanphilosophyandscripture.blogspot.com/...
১৩/ এত এত কদাচারীতে বিভ্রান্ত তরুণ সমাজ যখন জানিতে চায় যে তবে কি সনাতনীরা প্রতিমা পুজা বন্ধ করবে তখন হাজার বছরের সনাতনী মান্যতায় ও শাস্ত্রীয় সিদ্ধান্তে স্পষ্ট উত্তর দিতে হবে যে আমরা প্রতিমা পুজা করতাম, করি এবং অদুর ভবিষতেও করে যাব। এই বিষয়ে শাস্ত্রীয় ও যৌক্তিক ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো।
💥https://sanatanphilosophyandscripture.blogspot.com/...
💥পরিশেষে বলতে চাই কোন সম্প্রদায় কিংবা পরম্পরাহীন ব্যাক্তিকেন্দ্রিক বিশেষ সমাজ আমাদের সনাতনী দর্শনের মানদন্ড নিয়ে কি কদাচারী করল তাতে আমাদের বিচলিত হওয়ার কোন কারণ নেই।। সনাতন দর্শন, শাস্ত্র ও পরম্পরায় প্রতিমা পুজা মান্য উপাসনা পদ্ধতি।
নমো বিষ্ণু
হর হর মহাদেব
জয় ভবানী
© SPS পরিবার
(সনাতনী ঐক্য, কল্যাণ ও প্রচারে অবিচল)
0 মন্তব্যসমূহ