💠লীলা পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণ 💠 পর্ব- ১

 

💠লীলা পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণ 💠 পর্ব- ১


স্বাভাবিকভাবে লীলা অর্থ খেলা।। পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের লীলা কোন সাধারণ খেলা নয়।।

ছোট ছোট শিশুদেরকে খেলার ছলে শিক্ষা দেওয়ার পদ্ধতি প্রচলিত আছে এমনকি উচ্চশিক্ষায়ও বিভিন্ন উদাহরণ কিংবা ব্যাবহারিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষাপদ্ধতি প্রচলিত আছে।।

পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণও লোকশিক্ষার জন্য ধরাধামে অবতীর্ণ হয়ে অসংখ্য লীলা করেছেন। তাই ত পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণকে বলা হয় লীলা পুরুষোত্তম

🔲 শ্রীমদভগবদগীতার ৩/২২-২৪ শ্লোকসমূহে তিনি স্পষ্টই বলেছেন, তিনি লোকশিক্ষার জন্য কর্ম করেন নাহলে তাঁর কোন কর্তব্য কর্ম নেই। মনুষ্যসকল যেন পথভ্রষ্ট না হন কিংবা অশুভকর্মে লিপ্ত না হন তাই ত তিনি কর্মময় মনুষ্য জীবন যাপিত করে লোকশিক্ষা দিয়েছেন।

ধারাবাহিকভাবে পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের লীলাসমুহ তাৎপর্যসহ সকলের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব৷

🔶 মা যশোদা কর্তৃক শ্রীকৃষ্ণকে বন্ধনঃ

ছোটবেলায় শিশু কৃষ্ণ একবার মা যশোদার অগোচরে মাখনের কলস ভেঙে বানরদের মাখন খাওয়াচ্ছিলেন। এমতাবস্থায় মা যশোদা যখন এটা দেখে ফেললেন তখন বালক কৃষ্ণ ভয়ে পালয়ন করলেন৷ মা যশোদাও ক্রোধিত হয়ে বালক কৃষ্ণের পেছনে ছড়ি হাতে ছুটতে লাগলেন। যোগীরা যাঁকে ধ্যানেও লাভ করতে পারেন না সেই পরমেশ্বরকে ধরতেই মা যশোদা ছুটতে লাগলেন। মা যখন প্রায় ক্লান্ত তখন বালক কৃষ্ণ নিজেকে মায়ের হাতে ধরা দিলেন। মা যশোদা এবার শাস্তিস্বরূপ শ্রীকৃষ্ণকে বাধতে চাইলেন কিন্তু হাতের দড়ি দিয়ে কিছুতেই কৃষ্ণকে আবদ্ধ করতে পারলেন না এবং দুই অাঙ্গুল পরিমাণ কম পড়ল দড়ি। মা যশোদা আরও আরও দড়ি আনয়ন করলেন এবং প্রতিবারই দুই আঙ্গুল পরিমাণ দড়ি কম পড়ে গেলো। মা যশোদা যখন প্রতিনিয়ত চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে নিজেকে সমর্পন করে দিলেন তখনই বালক কৃষ্ণ মায়ের হাতে নিজেকে আবদ্ধ করলেন।

🔹 এই লীলায় পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ শিক্ষা দিলেন ঈশ্বর সর্বশক্তিমান এবং সর্বত্রই আছেন কিন্তু তিনি না চাইলে তাঁকে ধরা তথা পাওয়া যায় না। তারপরেও ভক্তের ভালোবাসার কাছে তিনি অতিশয় দুর্বল এবং ভক্তের সামান্য রজ্জু স্বরূপ প্রেমে আবদ্ধ হয়ে যান। তিনি সদা সর্বদা সর্বত্রই ছুটে বেড়াচ্ছেন কিন্তু অল্প সংখ্যকই তাঁকে পেতে চাইছেন এবং যারা চাইছেন তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যকই তাঁকে প্রাপ্ত হচ্ছেন। কিন্তু শুদ্ধ ভক্ত ভগবানের চরণারবিন্দে সর্বোতভাবে সমর্পন করলে ভগবান স্মিত হেসে ভক্তের হাতে আবদ্ধ হন।।

🔳 শাস্ত্র_বিশ্লেষণঃ

ঋগবেদের পুরুষ সুক্তের প্রথম মন্ত্রে,
"সগস্রশীর্ষা পুরুষঃ সহস্রাক্ষঃ সহস্রপাৎ।
স ভূমিং বিশ্বতো বৃত্বাঅত্যতিষ্ঠদ্দশাঙ্গুলম্।।"

অনুবাদঃ সেই পরম পুরুষের সহস্র মস্তক, সহস্র চক্ষু ও সহস্র চরণ। তিনি সমস্ত বিশ্বকে পরিব্যাপ্ত করিয়াও দশ আঙ্গুল পরিমাণ অতিক্রম করিয়া অবস্থান করে আছেন।

অর্থাৎ, সেই অনন্ত পরমেশ্বর সমগ্র বিশ্বকে পরিব্যাপ্ত করিয়া আছেন৷ মহাবিশ্বের সকল জ্ঞানও যদি অর্জন করে নেই, শুদ্ধ জ্ঞাননেত্র দ্বারা পরমেশ্বরের স্বরূপও যদি দর্শন করে নেই তবুও পরম পুরুষ আমাদের দৃষ্টিসীমা থেকে দশ আঙ্গুল পরিমাণ অতিরিক্ত হয়ে অবস্থান করেন৷ তাই অনন্ত পরমেশ্বরকে সম্পূর্ণ জানিতে হইলে ভক্তির প্রয়োজন, তাঁর প্র‍তি সমর্পন প্রয়োজন। সাধন, ভক্তি ও সমর্পনে যদি ঈশ্বরের কৃপা হয় তবেই তাঁকে সম্পূর্ণভাবে জানা সম্ভব।

পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ শ্রীমদভগবদগীতার দ্বাদশ অধ্যায়ের ৬-৭ শ্লোকে বলেছেন,
"যাহারা সমস্ত কর্ম আমাতে অর্পিত করিয়া, একমাত্র আমাতেই চিত্ত একাগ্র করিয়া ধ্যাননিরত হইয়া আমার উপাসনা করেন, হে পার্থ আমাতে সমর্পিত চিত্ত সেই ভক্তগণকে আমি অচিরাৎ সংসারসাগর হইতে উদ্ধার করিয়া থাকি।"

©স্টিমন অনিক।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

  1. চুল এটা বাংলা শব্দ কিন্তু বডার ক্রসকরলে এটা বাঃ ল হয়ে জায় আর কিছু বললাম না 🤣🤫

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. বিচিহীনকেও একটু স্টাইল করে বললে "নো বিচি" হয়ে যায় আর কিছু বললাম না। :D

      মুছুন